চিরকালের জন্য চলে গেলেন তিস্তাপারের বৃত্তান্তের সৃষ্টিকর্তা। বিশিষ্ট সাহিত্যিক দেবেশ রায় আর নেই। তাঁর অসংখ্য কালজয়ী উপন্যাস, ছোট গল্প এবং প্রবন্ধ পিছনে ফেলে বৃহস্পতিবার রাতে চলে গেলেন তিনি।
তেঘরিয়ার এক নার্সিংহোমে ১২তারিখ রাতে তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল সোডিয়াম, পটাসিয়ামের সমস্যার জন্য। সে দিনই ভেন্টিলেশনে চলে যান বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তি লেখক। বৃহস্পতিবার রাত দশটা পঞ্চাশে প্রয়াত হলেন তিনি,মৃত্যুকালে তাঁর বয়েস হয়েছিল ৮৪ বছর।
এমনিতে এক সপ্তাহ আগেও সক্রিয় ছিলেন দেবেশবাবু। দু’তিন দিন হল অসুস্থ হয়েছিল। আজ ১৫ মে,২০২০ শুক্রবার সকাল সওয়া আটটায় দেবেশ রায়ের দেহ আনা হবে বাগুইহাটির বল্মীকি আবাসনে, যেখানে তিনি থাকতেন। সেখান থেকেই সরাসরি নিয়ে যাওয়া হবে রতনবাবুর ঘাটে।
সাহিত্যিক মহলে ‘লেখকদের লেখক’ বলা হতো দেবেশবাবুকে। তাঁর নিজস্ব লেখার স্টাইল এক অন্য ঘরানা তৈরি করে বাংলা সাহিত্যে। যা ভেঙে দেয় প্রচলিত ধারা।
১৯৯০ সালে তিস্তাপারের বৃত্তান্তের জন্য সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান তিনি। ঔপন্যাসিক, প্রবন্ধকার, গল্পকারের পাশাপাশি তাঁর আরও একটি পরিচয় মনে রাখবে বাঙালি। ১৯৭৯ সাল থেকে এক দশক তিনি সম্পাদনা করেছেন ‘পরিচয়’ পত্রিকা। অনেক লেখক তৈরি করেছেন সে সময়।
তাঁর জন্ম ১৯৩৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর। বাংলাদেশের পাবনা জেলার বাগমারা গ্রামে। কিন্তু বেড়ে ওঠার সূত্রে উত্তরবঙ্গ। লেখার পাশাপাশি রাজনীতিতে জড়িয়ে পরেন বামমনস্ক লেখক দেবেশ রায়। ট্রেড ইউনিয়ন করেছেন চুটিয়ে। শ্রমিক আন্দোলনে অন্যতম নেতৃত্ব হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
তাঁর প্রথম উপন্যাসের নাম যযাতি। বাংলা সাহিত্যে চিরকাল বেঁচে থাকবে তাঁর অসংখ্য উপন্যাস—বরিশালের যোগেন মণ্ডল, মানুষ খুন করে কেন মফস্বলী বৃত্তান্ত, সময় অসময়ের বৃত্তান্ত, লগন গান্ধার, আত্মীয় বৃত্তান্ত। বাংলা সাহিত্যের এক অন্য ইতিহাসের বৃত্তান্ত শেষ হয়ে গেল দেবেশ রায়ের প্রয়াণে।
সিপিআই(এম) পার্টির রাজ্য পার্টির পক্ষ থেকে লেখক দেবেশ রায়ের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে।
শেয়ার করুন