general-strike-2025

৯ জুলাই সারা দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট বাঁচার লড়াই- দেশ রক্ষার লড়াই

সুকান্ত কোঙার

১৮ মার্চ’২০২৫ দিল্লিতে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ও অসংখ্য ফেডারেশন কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী, স্বৈরাচারী, সংবিধান বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে ২০ মে'২৫ সারা দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেয়। সংযুক্ত কিষান মোর্চা এই ধর্মঘটকে সমর্থন করে। পহেলগাও এর ঘটনার পর পরিস্থিতির পরিবর্তনের কারণে ধর্মঘট পরিবর্তিত হয়ে ৯ জুলাই’২৫  ডাকা হয়।

যে দাবিগুলি নিয়ে এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে তা হলো- শ্রম কোড বাতিল করতে হবে, মাসিক ন্যূনতম মজুরি ২৬০০০ টাকা ও পেনশন ৯০০০ টাকা করতে হবে, স্থায়ী পদে অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ করা চলবে না, ৪৫ দিনের মধ্যে ট্রেড ইউনিয়নের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট দিতে হবে, মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে হবে- গণ বন্টন ব্যবস্থাকে জোরদার করতে হবে, দেশের সম্পদ বেসরকারিকরণ করা চলবে না, কৃষকের ফসলের লাভজনক দাম দিতে হবে- সার ও বিদ্যুতে ভর্তুকি বাড়াতে হবে- কৃষি ঋণ মুকুব করতে হবে- ফসল বীমা চালু করতে হবে, বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল ২০২২ বাতিল করতে হবে- স্মার্ট মিটারের নামে বিদ্যুৎ বন্টন ব্যবস্থাকে বেসরকারিকরণ এর মাধ্যমে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো চলবে না, কাজের অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে, সমস্ত শূন্য পদে নিয়োগ করতে হবে, ১০০ দিনের কাজকে ২০০ দিন করতে হবে- মজুরি দৈনিক ৬০০ টাকা করতে হবে- শহরেও এই প্রকল্প চালু করতে হবে, বনাঞ্চল অধিকার আইন কঠোরভাবে কার্যকরী করতে হবে- এই আইন সংশোধনের নামে বনাঞ্চলে বসবাসকারীদের অধিকার কেড়ে নেওয়া চলবে না, বিনামূল্যে শিক্ষা- স্বাস্থ্য- পানীয় জলের অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে হবে, অতি ধনীদের উপর কর চাপাতে হবে- কর্পোরেট কর বাড়াতে হবে- সম্পদ কর ও উত্তরাধিকার কর চালু করতে হবে, সংবিধান ও গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হবে।

স্বাধীনতার ৭৭ বছর পেরিয়ে গেছে। একের পর এক কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির কারণে মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের সম্পদ বিপুলভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, আর ব্যাপক সংখ্যক মানুষ চরম দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। পুঁজিবাদী সমাজে যারা উৎপাদন করে তারাই সব কিছু থেকে বঞ্চিত হয়। সমাজে বৈষম্য নির্মমভাবে বাড়ছে। দেশের সবচেয়ে ধনী ৫% মানুষের সম্পদের পরিমাণ দেশের মোট সম্পদের ৭০%, দেশের সবচেয়ে বড় ৫ জন ধনীর ক্ষেত্রে এটা ২০%।

১৯৯১ সালে কংগ্রেসের চালু করা নয়া উদারনীতি আজ ফ্যাসিবাদী চরিত্রের আরএসএস দ্বারা পরিচালিত কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বেপরোয়াভাবে প্রয়োগ করে চলেছে। এই উদারনীতি পুঁজিপতিদের জন্য উদার, কিন্তু মেহনতি মানুষ সহ সাধারণ মানুষের জন্য নির্মম। উদারনীতির আক্রমণ বহুমুখী।

পুঁজিবাদের সংকট পদ্ধতিগত। সাধারণ মানুষের  কেনবার ক্ষমতা না থাকলে শিল্পে সংকট হতে বাধ্য। আর এই সংকট থেকে বাঁচবার জন্য পুঁজিপতিরা সংকটের বোঝা শ্রমিক শ্রেণীর ঘাড়ে চাপাচ্ছে। অসংগঠিত শ্রমিক বিপুলভাবে বাড়ছে। স্থায়ী পদে অর্ধেকেরও কম বেতনে অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ করা হচ্ছে। এদের কাজের কোন গ্যারান্টি নেই, হায়ার এন্ড ফায়ার অর্থাৎ যখন ইচ্ছা তখন শ্রমিকদের ছাঁটাই করা যাবে। এই সমাজব্যবস্থার কারণে ভারতবর্ষে কোটি কোটি বেকার। এই বেকারত্বের সুযোগ নিয়ে শ্রমিকদের অত্যন্ত কম মজুরিতে কাজ করানো হচ্ছে। সমস্ত আইনসম্মত অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।

কেন্দ্রের বিজেপি সরকার পুরোনো শ্রম আইন বাতিল করে ৪টি শ্রম কোড আইনে পরিণত করেছে। এই শ্রম কোড সম্পূর্ণভাবে মালিকদের পক্ষে এবং শ্রমিকদের পক্ষে তা মৃত্যুদণ্ড। নির্মমভাবে কাজের ঘন্টা বাড়ানো হচ্ছে। মালিকদের শ্রমিক বিরোধী বেআইনি কাজগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করা নিষিদ্ধ হবে, কার্যত শ্রমিকদের ক্রীতদাসে পরিণত করতে চায়। তাই লড়াই ছাড়া শ্রমিক শ্রেণীর কাছে আর কোনো রাস্তা নেই। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার মালিকদের ১৮০ ধরনের অপরাধকে বৈধতা দিয়েছে। আরো অনেক অপরাধমূলক কাজকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

কেন্দ্রীয় সরকার এই আইনকে সরাসরি কার্যকরী করতে ভয় খাচ্ছে। তাই রাজ্য সরকারগুলোকে দিয়ে শ্রমিক বিরোধী এই আইনগুলিকে কার্যকরী করানোর চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে শুধু বিজেপি পরিচালিত রাজ্য সরকারগুলির ভূমিকা খারাপ- তা নয়। এমনকি কংগ্রেস ও আঞ্চলিক দলগুলি পরিচালিত সরকারের ভূমিকাও ভালো নয়। ব্যতিক্রম শুধু কেরালার বাম এবং গণতান্ত্রিক সরকার।

কাজের সন্ধানে সারাদেশে মেহনতি মানুষ এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের সুবিধার জন্য যে আইন ছিল তা তুলে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকরা

নির্মম অত্যাচারের শিকার হচ্ছে। আমাদের রাজ্যে প্রতিদিন কোন না কোন পরিযায়ী শ্রমিকের মৃতদেহ আসছে।

আশা, মিড ডে মিল, অঙ্গনওয়াড়ি সহ প্রকল্প  শ্রমিকদের কাজের বোঝা ক্রমশ বাড়ছে। নির্মম শোষণ চলছে। এদের শ্রমিক হিসাবে স্বীকৃতি দিতে হবে।

পুঁজিবাদী সমাজে শ্রমিকরা শুধু শোষিত হয় না। ভালো করে বেঁচে থাকার যে তাদের একটা অধিকার আছে, সেটাও এই সমাজে অস্বীকৃত হয়। বাঁচার মতো মজুরি, ৬০ বছর বয়সের পর উপযুক্ত পরিমাণে পেনশন, বিনামূল্যে উপযুক্ত মানের শিক্ষা- স্বাস্থ্য- বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে হবে।

একদিকে কাজ নেই, কাজ থাকলেও বাঁচার মতো মজুরি নেই, কাজের নিরাপত্তা নেই। অন্যদিকে মূল্যবৃদ্ধি শ্রমিক সহ সাধারণ মানুষের জীবনকে দূর্বিসহ করে তুলছে। কেন্দ্রীয় সরকার প্রত্যক্ষ কর কমাচ্ছে (যা মূলত ধনীরা দেয়), পাশাপাশি পরোক্ষ কর বাড়াচ্ছে (যা মূলত সাধারণ মানুষ দেয়)। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার কর্পোরেট কর ৩০% থেকে কমিয়ে ২২% করেছে। ওষুধ সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের উপর বিপুল মাত্রায় জিএসটি - র কারণে মূল্যবৃদ্ধি ভয়ংকর আকার ধারণ করেছে। মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে গেলে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের উপর করের বোঝা কমাতে হবে, ১৪টি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস গণবন্টন ব্যবস্থার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। কেন্দ্রের এই বিজেপি সরকার সাধারণ ব্যবসায়ী ও দেশের কৃষকদের ঋণ মুকুব করেনি। প্রায় ১৬ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মকুব করেছে একচেটিয়া পুঞ্জিপতিদের।

দেশের ৭৫ লক্ষ বিড়ি শ্রমিকদের যে সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থা ছিল তা তুলে দিয়েছে, এটাকে কার্যকরী করতে হবে। ৫ কোটি ৭৫ লক্ষ নির্মাণ এবং গৃহ নির্মাণ শ্রমিকদের সামাজিক প্রকল্পকে উন্নত করতে হবে, ৩০ কোটির অধিক ই শ্রম পোর্টালে অন্তর্ভুক্ত অসংগঠিত শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষার অধীনে আনতে হবে। এর জন্য বাজেটে বরাদ্দ করতে হবে। গিগ এবং প্ল্যাটফর্ম শ্রমিকদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।

জনগণের টাকায় তৈরি হওয়া রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বেসরকারি পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। সরকার বিপুল টাকা খরচ করে পরিকাঠামো তৈরি করে সেটা ন্যাশনাল মানিটাইজেশন পাইপলাইনের নামে বেসরকারি মালিকদের হাতে তুলে দিচ্ছে মূলত তাদের মুনাফা অর্জনের জন্য। কি নেই এই তালিকায়? ভারতীয় রেল, সড়ক পরিবহন, কয়লা খনি, অন্যান্য খনি, পোর্ট ও ডক, প্রতিরক্ষা, বিদ্যুৎ, ইস্পাত, পেট্রোলিয়াম, ডাকঘর, টেলিকম, ব্যাংক, বীমা- এমনকি প্রতিরক্ষার কারখানা পর্যন্ত বেসরকারিকরণ করা হচ্ছে। অথচ প্রতিরক্ষার সঙ্গে দেশের নিরাপত্তা যুক্ত। স্মার্ট মিটারের নামে বিদ্যুৎ বন্টন ব্যবস্থাকে বেসরকারিকরণ করে বিদ্যুতের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই সমস্ত কাজকে দেশদ্রোহিতা ছাড়া আর কি বলা যেতে পারে?

আমাদের রাজ্যে একটা অত্যাচারী সরকার চলছে। এই সরকার ভোটের অধিকার সহ সাধারণ মানুষের সমস্ত গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। ২০১১ সালে সরকারে আসার পর থেকেই রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী ধারাবাহিকভাবে ঘোষণা করে চলেছেন যে, আমার রাজ্যে ধর্মঘট চলবে না। এ হলো কেন্দ্রের স্বৈরাচারী শ্রমিক বিরোধী সরকারের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি। কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির বিরুদ্ধে ধর্মঘট করলে যে রাজ্য সরকার সবচেয়ে নির্মমভাবে ধর্মঘট ভাঙার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তা হলো আমাদের রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। এই স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই না করে শ্রমিক আন্দোলন এগোতে পারবে না।

শ্রমিক বিরোধী, জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে গেলে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ করা জরুরী। এই ঐক্যকে ভাঙার জন্যই মানুষকে তার শ্রেণী পরিচয় ভুলিয়ে দিয়ে তাকে জাত, ধর্ম, সম্প্রদায়, ভাষা ইত্যাদির ভিত্তিতে ভাগ করে শ্রমিকদের ঐক্যকে চুরমার করতে চাইছে। পুঁজিবাদী সমাজের বৈষম্যকে আড়াল করার জন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ঘৃণার পরিবেশ তৈরি করে হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ করতে চাইছে। প্রচার করা হচ্ছে যে, বিজেপি হিন্দুদের পার্টি। এটি সর্বৈব মিথ্যা। ছাঁটাই হলে, জিনিসপত্রের দাম বাড়লে হিন্দুরা কি বাদ যায়? কেন্দ্রীয় সরকারের সমস্ত জনবিরোধী নীতির কুফল হিন্দুদেরও ভোগ করতে হয়। ‘হিন্দুত্ব’ শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন সাভারকার। তিনি বলেন, ‘এটি একটি রাজনৈতিক নির্মাণ এবং এর সঙ্গে ধর্মের কোন সম্পর্ক নাই।’

বিজেপি আসলে একচেটিয়া পুঁজিপতি-জমিদার-জোতদারদের দল। বিজেপি সরকারের আমলে এই অংশ অনেক বেশি সম্পদশালী হয়েছে। অন্য দিকে সমাজে বৈষম্য বেড়েছে। সমান অধিকার সম্পর্কে আরএসএস নেতা গোলওয়ালকার বলেছেন, ‘বৈষম্য হলো প্রকৃতির অবিভাজ্য অংশ এবং আমাদের এর মধ্যেই বাস করতে হবে। সুতরাং যে ব্যবস্থা প্রকৃতিগত বৈষম্যকে সমান অধিকারের আওয়াজ দিয়ে দূর করতে চায় তা ব্যর্থ হতে বাধ্য।’ অন্যদিকে জামাত-ই-ইসলামী প্রধান মাহুদি বলেছিলেন, ‘স্বাধীনতা সাম্য, ধর্মনিরপেক্ষতা, সংসদীয় ব্যবস্থা- এ সবই হচ্ছে বিদেশি।’ আসলে উভয় সাম্প্রদায়িক শক্তির লক্ষ্য এক। তা হলো- মানুষকে বিভাজিত করে বর্তমান শোষণের ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখা। এই বিষয়ে শ্রমিকদের সচেতন না করে গণ আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না।

এই ধর্মঘট কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রমিক, কৃষক সহ সাধারণ মানুষের সর্বনাশ সৃষ্টিকারী নীতির বিরুদ্ধে। তাই ধর্মঘট ডাকলে পুঁজিপতিদের দ্বারা পরিচালিত প্রচার মাধ্যম গেল গেল রব তোলে। বলা হয় যে ধর্মঘট হচ্ছে কর্মনাশা। বর্তমানে কোটি কোটি মানুষের হাত আছে, কিন্তু কাজ নেই। তাই কর্মনাশা নীতির বিরুদ্ধে এই ধর্মঘট। আসলে শ্রমিক শ্রেণী যখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াইয়ে নামে তা দেখে পুঁজিপতিরা ভয় খায়। ধর্মঘট শ্রমিকদের চেতনার চোখ খুলে দেয়। ধর্মঘট সম্পর্কে কমরেড লেনিন বলেছেন- পুঁজিবাদী ব্যবস্থার চরিত্রের কারণে শ্রমিকদের ধর্মঘট করতে হয়।  ধর্মঘটের মধ্যে দিয়ে শ্রমিকেরা এই দাবি তুলে ধরে যে, তাদের শ্রমশক্তি শুধুমাত্র মুষ্টিমেয় পরজীবীদের ধনী করার জন্য নয়, শ্রমিকশ্রেণীরও অধিকার আছে মানবিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য। তাই ধর্মঘট সব সময় পুঁজিপতিদের মধ্যে ভয় ঢুকিয়ে দেয়, কারণ তারা তখন তাদের আধিপত্য সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করতে থাকে। প্রত্যেকটি ধর্মঘট পুঁজিপতিদের মনে করিয়ে দেয় যে শ্রমিকরাই হল উৎপাদনের আসল কারিগর, তারা অসহায় নয়, তারা একা নয়। ধর্মঘট শ্রমিকদের শুধু পুঁজিপতিদের সম্পর্কে চোখ খুলে দেয় না, সরকার ও আইন সম্পর্কেও চোখ খুলে দেয়। ধর্মঘট তখনই সফল হবে যখন শ্রমিকরা ব্যাপকভাবে শ্রেণী সচেতন হবে। লেনিনের এই বক্তব্য থেকে শিক্ষা নিতে হবে।

শ্রমিকদের কাছে লড়াই ছাড়া আর কোন রাস্তা নেই। লড়াই করেই কৃষকেরা কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছে, লড়াই করার কারণে এখনও পর্যন্ত শ্রম আইন সরাসরিভাবে কার্যকরী করতে পারেনি। তাই ধর্মঘট সফল করতে গেলে প্রয়োজন প্রত্যেকটি শ্রমিকের কাছে আমাদের দাবিগুলিকে তুলে ধরা। ধর্মঘটের দাবিগুলি যে তার নিজের দাবি সেই অনুভূতি তাদের মধ্যে গড়ে তুলতে হবে এবং ধর্মঘটের দিন শ্রমিকদের যুক্ত করে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। লড়াই ছাড়া অন্য কোন রাস্তা শ্রমিক শ্রেণীর কাছে নেই। সমস্ত শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষেত্রে লাল ঝান্ডাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। সিআইটিইউ সেই কাজ করে চলেছে। শ্রমিক, কৃষক, মেহনতী মানুষের ঐক্য জিন্দাবাদ। দুনিয়ার মজদুর এক হও।


শেয়ার করুন

উত্তর দিন