তারিখ: ২ জানুয়ারি, ২০২৩,সোমবার
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) এর পলিট ব্যুরো নিম্নলিখিত বিবৃতি জারি করেছে:
২০১৬ সালের নোটবন্দী নিয়ে পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের রায়কে, এই পদক্ষেপকে সমর্থন করে বলে ব্যাখ্যা করা যায় না।
সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতিদের রায়ে সুপ্রিম কোর্ট এককভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আইনি অধিকারের কথা উল্লেখ করেছে এবং এই সিদ্ধান্ত RBI আইন ১৯৩৪-এর ধারা ২৬(২) লঙ্ঘন করে না, এই কথাই বলেছে।মাননীয় বিচারপতিদের একজন ভিন্নমত পোষণ করে বলেন যে RBI আইনের এই ধারাটি উল্লেখ করে যে আরবিআইকে অবশ্যই নোটবন্দী করার জন্য সরকারকে সুপারিশ করতে হবে। এই ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং আরবিআই-এর মতামত চেয়েছে। তাই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার আগে সংসদের অনুমোদন নেওয়া উচিত ছিল।
সংখ্যাগরিষ্ঠ রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে নোটবন্দী যে লক্ষ্যগুলি অর্জন করতে চেয়েছিল তার সঙ্গে "যুক্তিসঙ্গত সম্পর্ক" ছিল এবং এক্ষেত্রে "উদ্দেশ্যটি অর্জিত হয়েছে কিনা তা প্রাসঙ্গিক নয়"।
এই সংখ্যাগরিষ্ঠ রায়ে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সরকারের আইনি অধিকার বহাল রাখলেও এই ধরনের সিদ্ধান্তের প্রভাব সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি।নোটবন্দীর ফলে ভারতের অসংগঠিত অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে যা কোটি কোটি মানুষের কর্মসংস্থান করে। এটি কুটীর শিল্প ক্ষেত্র, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পসংস্থা(এমএসএমই)গুলোকে পঙ্গু করে দিয়েছে, কোটি কোটি জীবিকা ধ্বংস করেছে। একটা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে ২০১৬ সালে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকে এক মাসে ৮২ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
উপরন্তু, কালো টাকা খুঁজে বের করা এবং বিদেশী ব্যাঙ্কগুলি থেকে ফেরত আনা, জাল টাকা ধ্বংস করা ; সন্ত্রাসের অর্থায়ন, দুর্নীতি বন্ধ করা এবং অর্থনীতিতে নগদ প্রবাহ হ্রাস করা সম্ভব - এই বিপর্যয়কর সিদ্ধান্তকে ন্যায্যতা দেওয়ার কোন লক্ষ্যই পূরন হয়নি। বিপরীতে, আরবিআই-এর মতে, জনসাধারণের হাতে নোটবন্দীর প্রাক্কালে যেখানে ১৭.৭ লক্ষ কোটি টাকা নগদ ছিল নোটবন্দীর পরে এখন তা ৭১.৮৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৩০.৮৮ লক্ষ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ রায় শুধুমাত্র সরকারের এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারকে মান্যতা দিয়েছে এবং কোনোভাবেই এই ধরনের সিদ্ধান্তের পরিণতিকে সমর্থন করে না।