দুঃস্বপ্নের এক দশক : চন্দন দাস...

নভেম্বর ২৭ ,২০২০ শুক্রবার
পর্ব ১০
স্বনির্ভরতায় ভাটা, আত্মঘাতী
মহিলার সংখ্যায় রাজ্য প্রথম



পশ্চিমবঙ্গ মহিলাদের আত্মহত্যার নিরিখে দেশে প্রথম। আত্মহত্যা সংক্রান্ত জাতীয় পর্যায়ের সর্বশেষ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে চলতি বছরের আগস্টে। সেই রিপোর্ট ২০১৯-এ রাজ্যগুলির রিপোর্টের ভিত্তিতেই তৈরি। সেই রিপোর্ট অনুসারে পশ্চিমবঙ্গে ২০১৯-এ ৪৮৯৬ জন মহিলা আত্মঘাতী হয়েছিলেন। সরকার জানিয়েছে এদের মধ্যে ৯৮১ জনের মৃত্যুর কারণ পুলিশ জানতে পারেনি।
‘কারণ জানাই’-র মধ্যেই লুকিয়ে আছে অনেক তথ্য। কত জন প্রেমের কারণে, কতজন বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কারণে, কতজন অসুস্থতার কারণে আত্মঘাতী হয়েছে পুলিশ জানতে পেরেছে। কিন্তু এই ৯৮১ জনের মৃত্যুর কারণ পুলিশ জানতেই পারেনি!
তৃণমূল কংগ্রেস স্বীকার করে না রাজ্যের কোনও কৃষিজীবী আত্মঘাতী হয়। ফলে তারা কোনও কৃষক রমনীর আত্মহত্যার তথ্যই দেয়নি। সবক্ষেত্রে লেখা ‘শূণ্য’। কিন্তু সরকার স্বীকার করে নিয়েছে রাজ্যে একবছরে ১১৩ জন দিনমজুর মহিলা আত্মঘাতী হয়েছেন। তাছাড়া ৬ জন কাজ না পাওয়া মহিলাও আত্মহত্যা করেছেন বলে রাজ্য সরকার জানিয়েছে। তবে একটি তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় আছে রিপোর্টে। আত্মঘাতী মহিলাদের মধ্যে ১৯৩১ গৃহবধূ বলে সরকার জানিয়েছে। অর্থাৎ আত্মঘাতী মহিলাদের বড় অংশ হয় কর্মরত, না হয় ছাত্রী কিংবা কাজের খোঁজে থাকা মহিলা। রাজ্যের অর্থনীতির অস্থিরতা অথবা আর্থিক দুর্দশা মহিলাদের মধ্যেও নৈরাশ্য সৃষ্টি করেছে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর রিপোর্টে তার কিছুটা ইঙ্গিত পাওয়া যায়। ২০১৩ থেকে ২০১৯ — এই ছ’ বছরে পশ্চিমবঙ্গে কাজের খোঁজে থাকা ২৫৪ জন মহিলা আত্মঘাতী হয়েছেন। রাজ্য সরকারের রিপোর্টই তাই বলছে।

কাজের হাহাকার রাজ্যের মহিলাদের মধ্যেও এক অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। অনেক চাপাচাপি করেও আত্মঘাতী মহিলাদের সরকারী তালিকাতেও তার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মহিলা। রাজ্যের মহিলাদের একাংশের অনেক আশা ছিল তাঁর উপর। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী শ্রম কোড নিয়ে মুখ খোলেন না। তাঁর দলের নেতা কথা বলেন তিন তালাক নিয়ে।

দেশের ৪৫ তম শ্রম কংগ্রেস আইসিডিএস, আশাসহ এই ধরনের বিভিন্ন প্রকল্পের কর্মীদের ‘শ্রমিক’র মর্যাদা দিয়ে ন্যায্য প্রাপ্য সামাজিক সুরক্ষা সম্প্রসারণের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর সরকার তা অগ্রাহ্য করেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের নয়া লেবার কোডে উপেক্ষিতই রয়েছেন প্রকল্প কর্মীরা। এই কর্মীদের সামাজিক সুরক্ষা সম্প্রসারণ ছিল সময়ের দাবি। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার একের পর এক আক্রমন নামিয়ে এনেছে এদের উপর। মিড ডে মিলের প্রকল্পকে বেসরকারি হাতে তুলে দিয়ে ইতিমধ্যেই প্রকল্পটিকে পঙ্গু করার উদ্যোগ নিয়েছে মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের নয়াশিক্ষানীতির মাধ্যমে এই বেসরকারীকরণের চক্রান্ত করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হবেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। তাঁদের সিংহভাগ মহিলা।

কিন্তু মমতা ব্যানার্জি কিংবা তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও প্রতিবাদ শোনা যায়নি। বামপন্থীরা দাবি তুলেছে — ‘আর্লি চাইল্ডহুড কেয়ার অ্যান্ড এডুকেশন’, সংক্ষেপে ইসিসিই প্রকল্পকে দুর্বল করা যাবে না, শিশুদের প্রাক বিদ্যালয় শিক্ষাকে গালভরা আধুনিকীকরণের নামে বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম কিন্ডার গার্ডেন স্কুলের সঙ্গে যুক্ত করে আইসিডিএস প্রকল্পকে ধ্বংস করা যাবে না, নয়া শিক্ষানীতির আড়ালে আইসিডিএস মিড ডে মিল প্রকল্পগুলি তুলে দেওয়ার চক্রান্ত অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। মাসে ৭২৫০টাকা ভাতা পায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। দিন হিসাবে ২৪১টাকা। এই শিক্ষা নীতিতে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের প্রশিক্ষণের কথা বলা হলেও তাঁদের ভাতা বৃদ্ধি সম্পর্কিত একটি কথাও বলা নেই, তাঁদের প্রশিক্ষণের জন্য অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দের কথাও বলা নেই। মমতা ব্যানার্জি চুপ।

অথচ কী হয়েছিল তিন তালাক বিল প্রসঙ্গে? গত ২০১৮-র ৩রা জানুয়ারি তিন তালাক বিল নিয়ে মুখ খুলেছিলেন মমতা ব্যানার্জি। তার আগে, ২০১৭-র ২৮শে ডিসেম্বর লোকসভায় পাশ হয়েছিল তিন তালাক সংক্রান্ত বিল। সেদিন সি পি আই(এম) দুটি বদল চেয়েছিল বিলে। আর তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা চুপ করে বসেছিলেন। লোকসভায় পাশ হয়ে যাওয়া বিল নিয়ে প্রায় পাঁচদিন পরে বীরভূমে মুখ খুলেছিলেন মমতা ব্যানার্জি। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘বি জে পি একটা ভুল আইন নিয়ে এসেছে। একটা ডিফেক্টিভ বিল নিয়ে এসেছে। মহিলাদের নিরাপত্তা তো দূরের কথা, মহিলারা আরও বিপদে পড়ে যাবে এতে।’’ এই কথাটিই লোকসভায় মাত্র পাঁচদিন আগে, লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেস বলেনি কেন? দু’ মুখো নীতির কারন কী?
সেদিন মমতা ব্যানার্জি দুকূল রাখার ছলে আরও বলেছিলেনব ‘‘মনে রাখবেন ট্রিপল তালাক আমরা কিন্তু বিরোধিতা করিনি। বিরোধিতা করিনি এই কারনেই কারন আমরা মহিলাদের পক্ষে।’’ অথচ ২০১৬-র ৫ই নভেম্বর জমিয়তে উলেমায়া হিন্দের জনসভায়, ধর্মতলায় হাজির হয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি তিন তালাক রদ প্রসঙ্গে বলেছিলেন,‘‘জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়া চলবে না। আমার স্ত্রী আমার সঙ্গে থাকবে কিনা, তা আমিই ঠিক করবো।’’

নারীদের সম্পর্কে কী নিদারুণ মনোভাব তৃণমূল কংগ্রেসের। তাঁদেরই নেত্রী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। গত সাড়ে ন’ বছরে রাজ্যের মহিলাদের অবস্থা কোথায় দাঁড়িয়েছে? নিঃসন্দেহে তাঁদের সুরক্ষা একটি বিষয়। কিন্তু মহিলাদের বড় অংশ আর্থিক কর্মকান্ডে যুক্ত। তাঁদের বড় অংশই কৃষিকাজে যুক্ত থাকেন। এছাড়া বিড়ি বানানো, ইঁট ভাটার মত কাজেও মহিলাদের অনেকে যুক্ত। নির্মাণ শ্রমিক হিসাবেও একাংশের মহিলা কাজ করেন। অথচ রাজ্যের মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর সময়কালে অসংগঠিত ক্ষেত্রের এই শ্রমিকদের সুযোগ সুবিধাই কমানো হয়েছে। রাজ্য সরকার চালু সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প তুলে দিচ্ছে। তার বদলে নতুন একটি প্রকল্প তৈরি করেছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে,‘বিনা মূল্যে সামাজিক সুরক্ষা যোজনা(বিএমএসএসওয়াই)।’ চালু প্রকল্পে রাজ্য সরকার ৩০ টাকা দিতো। শ্রমিকরা ২৫ টাকা দিতেন। তার ভিত্তিতে তার পেনশন হত অবসরের পরে। সরকারের দাবি নতুন প্রকল্পে শ্রমিককে কোনও টাকা দিতে হবে না। কিন্তু শ্রমিকের পেনশন কি হবে, কেমন হবে — তার কোনও উল্লেখই নেই প্রকল্পে। ছাঁটাই করা হয়েছে চালু প্রকল্পে থাকা শ্রমিকদের যাবতীয় চিকিৎসার সুযোগ। নতুন প্রকল্পে চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোনও আর্থিক সুবিধা রাখা হচ্ছে না। রাজ্যের শ্রম দপ্তর তার নোটে জানিয়েছে,‘‘চালু প্রকল্পে বিভিন্ন চিকিৎসা ও ওষুধ বাবদ যে আর্থিক সহযোগিতার প্রক্রিয়া রয়েছে সেই সবই বন্ধ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সেই সব সহযোগিতার পরিবর্তে, বিএমএসএসওয়াই-এ অন্তর্ভুক্ত সব উপভোক্তাকে রাজ্য সরকার পরিচালিত স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’’ অথচ স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পকে ঘিরেই অনেক অভিযোগ। ঠিকমত চিকিৎসা হয় না, হাসপাতাল ফিরিয়ে দেয় — এমন। ক্ষতিগ্রস্ত হবেন নারী শ্রমিকরাও। মহিলা মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের কথা ভাববেন না? স্বনির্ভর গোষ্ঠী শহরে এবং গ্রামে গরিব মহিলাদের মাথা তুলে দাঁড়ানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। বামফ্রন্ট সরকারের সময়কালে এই কাজে বিশেষ গুরুত্ব দিত। এখন কী হয়েছে?

রাজ্যের শহরাঞ্চলে ৬২,৮৮২টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী আছে বলে রাজ্য সরকার দাবি করে। ২০১৯-র মার্চে কোভিড আবহ ছিল না। রাজ্য সরকার তবু ঠিক করেছিল ওই শহরের গোষ্ঠীগুলির মধ্যে ১৩,৬০০ টিকে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। স্বভাবতই ব্যাঙ্কের মাধ্যমে। ২০২০-র মার্চের শেষে দেখা গেলো ঋণ পেয়েছে ৭৭৮টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০৪ কোটি টাকা। দেওয়া হয়েছে ৮ কোটি ৪৯ লক্ষ টাকা। কালিম্পং, কলকাতা, মালদহ, পশ্চিম বর্ধমানে একটি গোষ্ঠীও ঋণে পায়নি। গ্রামে ছবিটি কেমন?

গ্রামে স্বনির্ভর গোষ্ঠী বেশি। ২০২০-২১-এ রাজ্যের ৬,১৩, ৯৬০টি গোষ্ঠীকে ঋণের ব্যবস্থা করা হবে, রাজ্য সরকার এই লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছিল। বছর শেষে দেখা যাচ্ছে ঋণ পেয়েছে ১, ২৫,১৫৩টি গ্রামীণ গোষ্ঠী। তারা ঋণ পেয়েছে ১০১৬ কোটি ১৯লক্ষ টাকা। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫,০০৬ কোটি ৯৪লক্ষ টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার ৬.৭৭% ঋণ পেয়েছে গোষ্ঠীগুলি। জেলাগুলির অবস্থার দিকে চোখ রাখলে দেখা যায়, পূর্ব মেদিনীপুরের ৪২,৩২৮টি গোষ্ঠীর মধ্যে ঋণ পেয়েছে ৯৮৮৯টি, উত্তর ২৪ পরগনার ৩৮,০০৫টির মধ্যে ৬২১৩টি, বীরভূমের ৫০,৯৬০টির মধ্যে ৮৫২০টি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৪২,৬০২টির মধ্যে ৫৫৩৬টি, মুর্শিদাবাদের ৩৮,০০৮টির মধ্যে ৮০০০টি, মালদহের ৩৭,০৮৪টির মধ্যে ৫৫২৬টি গোষ্ঠী ঋণ পেয়েছে।

গত আর্থিক বছরে রাজ্যের গ্রামীণ গোষ্ঠীগুলি ঋণ পেয়েছিল ১২৬৯ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা — রাজ্য সরকারের রিপোর্টই তা বলছে। অর্থাৎ গ্রামীণ গোষ্ঠীগুলির মাথা তুলে দাঁড়ানোর জন্য মমতা ব্যানার্জির সরকারের সহায়তা কমেছে। অথচ তা বৃদ্ধি পাওয়ার কথা। গ্রামে গরিব পরিবারের মহিলাদের কাজের অন্যতম ক্ষেত্র একশো দিনের কাজের প্রকল্প। যা রেগা নামে বেশি পরিচিত। সেই একশো দিনের কাজের প্রকল্পের রেখচিত্রও বলছে গ্রামাঞ্চলে মহিলাদের কাজ দেওয়ার প্রশ্নে প্রশাসনের ভূমিকা আদৌ ইতিবাচক নয়। রাজ্যের গ্রামোন্নয়ন দপ্তর সূত্রে জানা যাচ্ছে, ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরে রাজ্যে ৩৬লক্ষ ১০ হাজার ৭০০জন মহিলাকে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কাজ দিতে পেরেছিল জেলা প্রশাসনগুলি। ২০১৯-২০-তে কাজ পেয়েছেন ৩৬লক্ষ ৮৪ হাজার ৪০০ জন। অথচ এই ছ’ বছরে গ্রামে কাজের হাহাকার বেড়েছে। গরিবের অবস্থা দুর্বিষহ হয়েছে। তবু গ্রামের গরিব পরিবারের মহিলাদের কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে ছ’ বছরে বিশেষ অগ্রগতি ঘটেনি। আত্মহত্যার আর এক বিবরণ দিয়েই শেষ করা যেতে পারে।
ঊর্মিলা প্রামাণিক একজন মৃতার নাম। একজন আত্মঘাতীর পরিচয়। কোনক্রমে ২০১৩-র ২০শে এপ্রিলের রাতটুকু লড়েছিলেন ঊর্মিলা প্রামাণিক। ভোরের নরম আলো সবিস্তারে ছড়িয়ে যাওয়ার আগে দুর্বিষহ আগুনকেই বেছে নিয়েছিলেন প্রৌঢ়া। মৃত্যুর আগে কতটুকু বিশ্বাস জীবন, সমাজ, রাজনীতি আর মানুষের প্রতি তাঁর অবশিষ্ট ছিল, তা নিয়ে গবেষণার অবকাশ কম। পরিচারিকা হিসাবে অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল ৩০ হাজার টাকা নির্দ্বিধায় খেয়ে নিয়েছে চিটফান্ড হাঙর — এ’ ধাক্কা সামলাতে পারেননি বারুইপুরের ওই মহিলা। গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মঘাতী হয়েছিলেন ঊর্মিলা প্রামাণিক — ২১শে এপ্রিল। আর ২৩শে এপ্রিল কয়েক লক্ষ আমানতকারীর লুঠ হয়ে যাওয়া টাকা প্রসঙ্গে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন —‘যা গেছে তা গেছে’। এমন অনেক মহিলা আত্মঘাতী হয়েছিলেন। অনেক আত্নহত্যা করেননি। কিন্তু মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। তাঁদের কারও পাশেই মমতা ব্যানার্জি দাঁড়াননি। ক্ষতিপূরণও বেশিরভাগ পাননি।

গত সাড়ে ন’ বছরে মহিলাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে রাজ্যে। রাজ্যের মোট অপরাধের ১৬.১৬% ঘটে মহিলাদের উপর আক্রমনের অপরাধ। জাতীয়গড় এই ক্ষেত্রে ৩.৯৭%। এই ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের আগে আছে ওড়িশা, আসাম এবং সিকিম। ধর্ষণে পশ্চিমবঙ্গ সর্বশেষ রিপোর্টে দেশের সামনের সারিতেই আছে। রাজ্যে বেড়েছে অপ্রাপ্তবয়স্ক বিয়ের ঘটনাও। ২০১৬-তে এমন ঘটনা রাজ্যে হয়েছিল ৪১টি। ২০১৭-তে তা হয় ৪৯টি। ২০১৮-তে পৌঁছে গেছে ৭০টিতে।

শিক্ষার ক্ষেত্রেও মমতা ব্যানার্জি সাফল্যের দাবি করতে পারেন না। কারন, উচ্চশিক্ষায় ১৮-২৩ বছরের যুবতীদের গ্রস এনরোলমেন্ট রেশিও পশ্চিমবঙ্গে ১৮.৭। দেশে এই ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের থেকে পিছিয়ে আছে আসাম, বিহার, দাদরা নগর হাভেলি, দমন দিউ, লাক্ষাদ্বীপ, ত্রিপুরা। গুজরাট এবং ঝাড়খন্ড এই ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের সমান। ১৮ বছর বয়স হলেই বিয়ে হয়ে যায় রাজ্যের ৪১.৬% মহিলার। তাহলে কয়েক হাজার কোটির সাইকেল কোন কাজে লাগলো? কণ্যাশ্রীই বা কী সাফল্য আনলো?
শেয়ার করুন

উত্তর দিন