কনীনিকা ঘোষ
রিঙ্কি মাথায় স্টোনচিপস, বালি আর সিমেন্টের কড়াটা নিয়ে ঠা ঠা রোদে হেঁটে রাস্তার ভাঙ্গা জায়গায় ঢালার জন্য যাচ্ছিল, আর মনে মনে ভাবছিল এই সপ্তাহের টাকাটা পেয়ে কিছু টাকা রাখতেই হবে, 'ওর বরের শরীর ভালো নেই, কতদিন ধরে কাজে আসতে পারছে না, ওষুধটা কিনতেই হবে। একদিন কামাই করে হাসপাতালে দেখাতে গেছিল, কি লাইন, একটা ছেলেকে দেখিয়ে সবাই বলল, ওকে বললে ও আগে করিয়ে দিতে পারবে। রিঙ্কি, নুরকে দাঁড় করিয়ে রেখে ওই ছেলেটার কাছে গেল, ছেলেটা একে ডাকছে, তাকে ধমকাচ্ছে। রিঙ্কি তো ভয় পেয়ে গেছিল, তবু সাহস নিয়ে ওকে বলেছিল আগে করিয়ে দেবার কথা। আসলে নূরের এত জ্বর দাঁড়াতে পারছে না, তার উপর সারাক্ষণ কাশছে তাই জন্যই তো বলতে আসতে হলো। ছেলেটা বলল ১০০ টাকা লাগবে তবে পারবে, আজ নাকি বেশী ভিড়, রিঙ্কি আর কি করে, এত কষ্টের রোজগারের টাকা তার থেকেই দিয়েছিল কিন্তু দেখছে তাদের আর ডাকছে না। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর আবার যখন গেল ছেলেটাকে দেখতেও পেল না, মনটাই খারাপ হয়ে গেল রিঙ্কির। একে তো পয়সা নেই তারপর বর কাজে যেতে পারছে না তার মধ্যে টাকাটা চোট হয়ে গেল। লাইনে দাঁড়ানো অন্যেরা বলছিল কেন দালালদের পয়সা দাও? এখন তো এই- ই হয়েছে সব জায়গায় শুধু ঘুষ আর ঘুষ। কি যে সরকার করে তা জানিনা বাপু, লাইনে দাঁড়ানো মাসিমা বলেছিলেন । বললেন দেখো হাসপাতালগুলো সব এই অবস্থা ! রিংকি নুরকে দেখলো, দেখানোর পর ডাক্তার বলল, "এখানে ওষুধগুলো নেই, খুব জ্বর তো, আপনি এটা বাইরে থেকে কিনে নিন" ওষুধও কিনেছিল রিঙ্কি,কত দাম, অনেক পয়সা খরচ হ হয়ে গেল। তবে ডাক্তারবাবু ওষুধ ভালো দিয়েছেন নূর একটু ভালো আছে। মনে হয় আর দুদিন বাদে কাজে আসতে পারবে। আসলে ওদের তো প্রত্যেক দিন প্রত্যেক দিনকার খাটনি। গতরে খাটতে পারলে তবে রোজগার ,তাও তো সব সময় কাজ থাকেই না। নূরের বাবা বলেছিলেন আগের সরকার নাকি কি একটা জমানোর ব্যবস্থা করেছিল পরে তা থেকে টাকা পাওয়া যেত কিন্তু এখন তো কিচ্ছু নেই । এমনকি রিঙ্কি যে সারাদিন কাজ করে ওর বরের চেয়ে তো কম মজুরি পায়। অনেকবার বলেছে, ঠিকাদার বলে 'তুমি না করলে অন্যকে ডেকে নেব, করলে কর না করলে না কর'। ও ভাবে এইরকম করেই ওদের চলবে, কত বাড়ি- রাস্তাঘাট বানায় কিন্তু ওদের এত কষ্ট করতে হবে? ভাবে ওর কপালটাই খারাপ।

হ্যাঁ এরকমই অবস্থা আমাদের দেশের অসংগঠিত শ্রমিকদের, আর এই অসংগঠিত ক্ষেত্রেই ৮০%= মেয়েরা কাজ করে । কোভিডের সময়ে সেই যে কাজ গেছে পরে তো তার অনেকটাই ফেরত আসেনি, এত আর্থিক অভাব অনটন আজ স্বামী-স্ত্রীর কাজ না করে তো পেটই চালাতে পারছে না তবু নারীদের মোট শ্রমশক্তিতে যোগদান ছিল ভারতে ৩৫.৬ শতাংশ পশ্চিমবঙ্গেও তথৈবচ ৩৫.৫ শতাংশ। একথা জানাচ্ছে পিরিওডিক লেবার ফোর্স সার্ভে (PLFS) এর ২০২৩ - ২৪ এর প্রতিবেদন। পশ্চিমবঙ্গে আবার ঘরোয়া উদ্যোগে যুক্ত 'স্বনিযুক্ত' কিন্তু হাতে মজুরি পান না এরকম সংখ্যা ২০'২ শতাংশ তার মানে এত বড় অংশের নারীদের GDP-র ক্ষেত্রে অবদান থাকলেও ,আসলে তারা উপার্জন করেন না। ফলত: তাদের শ্রমবাহিনী হিসাবে ধরা মানে বেকারদের হার কম দেখানো, এই রকমই মহিলাদের অবস্থা ।তার উপর অসংগঠিত কাজের ক্ষেত্রগুলিতে সুরক্ষার কোন বন্দোবস্তই নেই এমনকি এই যে রিঙ্কিদের কথা বলছিলাম ওদের জন্য তো একটু 'শৌচাগার' এর ব্যবস্থাও থাকে না, দিনের পর দিন সঠিক সময় শৌচাগারে না যেতে পেরে চেপে রাখতে হয় বর্জ্য, ফলত: নানান শারীরিক অসুবিধা তৈরি হয়। এ সব অসুবিধাগুলির প্রতিকার চাই। চাই সামাজিক সুরক্ষা।কিন্তু তার বদলে তো আরো আরো নির্মম হচ্ছে এই শাসক শ্রেণী। কর্পোরেটরা যখন খুশি তখন ছাঁটাই করে দেবে। সমকাজে সম মজুরি দূরে থাকে থাকবে না ন্যূনতম কোন মজুরি। গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্সে দেখা যাচ্ছে ১৪৬ টি দেশের মধ্যে ১৩৪ তম স্থানে ভারত কাজে সময় মজুরির প্রশ্নে এই লিঙ্গগত বৈষম্যে ভারত ১২০ তম স্থানে ।তাহলে এ কেমন শাসক, যারা মুখে শুধুই বড় ভাষণ দেয় মেয়েদের জন্য এই করছি ,ওই করছি বলে কিন্তু বাস্তবে এই অবস্থা, ওরা আরো বলছে ২৯টা শ্রম আইন বদলে দিয়ে করবে চারটি শ্রমকোড আর সেই শ্রমকোডে কেড়ে নেয়া হবে শ্রমিকের অধিকার। থাকবে না দরকষাকষি করার অধিকার, থাকবে না প্রতিবাদ করার অধিকার। ধর্মঘট করার অধিকারও থাকবে না শ্রমিক শ্রেণীর । ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে এতদিন এই শ্রমকোডের প্রয়োগ আটকে রাখা গেছে।, কিন্তু এখন ওরা মরিয়া হয়ে উঠেছে তাই শ্রমজীবীদের হতে হবে ঐক্যবদ্ধ, রুখতেই হবে এ শ্রম কোড। আচ্ছা বলুন তো যে রিঙ্কিদের পরিশ্রমে গড়ে ওঠে সভ্যতা ,তাদের জুটবে না মুখে দু মুঠো ভাত ,মিলবে না চিকিৎসার সুযোগ ,এ মানা যায় না ।তাই রিঙ্কিদের মতো অসংখ্য অসংগঠিত শ্রমিক মহিলা সামিল হবে ধর্মঘটে ।তাদের দাবি সব শ্রমজীবীদের মজুরি বাড়াতে হবে, প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বাড়বে আর মজুরি বাড়বে না, এ হতে পারে না ।দিতে হবে মাসে অন্তত ২৬ হাজার টাকা আর এরকম শ্রমিক যার নেই কোন সামাজিক সুরক্ষা তারা এতদিন ধরে যে রাষ্ট্রের জন্য সেবা করল,রাষ্ট্র এতোটুকু নেবে না তার দায়িত্ব? এই অন্যায় ব্যবস্থা কখনো চলতে পারে ? তাই চাই সবার জন্য পেনশন। সব ধরনের শ্রমিককে পেনশন দিতে হবে মাসে অন্তত ৯ হাজার টাকা। পুরনো পেনশন স্কীম ফিরিয়ে আনতে হবে ,দিতেই হবে সকলের সামাজিক সুরক্ষা। এই দাবিগুলো নিয়ে রিঙ্কিরা রাস্তায় নেমেছে ।ওরাই ৯ জুলাই নগরের রাজপথের দখল নেবে, বলবে আজ হরতাল আজচাকা বনধ। বীরভূমের কীর্নাহারের সেই চারজন মহিলা ক্ষেতমজুরের কথা মনে আছে, শীতের ভোরে যারা শুধু একটু কাজের আশায়, অন্য গ্রামে যেতে গিয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন। আসলে গ্রাম বাংলায় কাজের অবস্থাটা এরকমই। কাজের বাজারে নারী শ্রমশক্তির যে ৮০% অস্থায়ী ও অসংগঠিত কাজের সাথে যুক্ত তার ৪৮% কৃষি ক্ষেত্রে আর এর মধ্যে আবার বেশিরভাগই ক্ষেতমজুর ।বিভিন্ন সমীক্ষা বলছে প্রতিদিন কৃষিক্ষেত্রে কাজ কমছে ।স্বাভাবিকভাবে কাজের খোঁজে মহিলাদের গ্রাম থেকে গ্রাম, কখনো বা নিজের রাজ্য ছেড়ে অন্যত্র পাড়ি দিতে হচ্ছে। হতে হচ্ছে পরিযায়ী। বাসন্তী সরেন তাই ভাবে সারাদিন কোমর নিচু করে ধানের বীজতলা তৈরির কাজ, আলুর চোখ তৈরি হলে সেই আলু লাগানোর কাজ , তোলার কাজ, এরকম সময় গুলোতে যদি বা একটু কাজ মেলে ,বাকি সময় হাহাকার । বাসন্তী যে কিভাবে ছেলেমেয়েগুলোরপাতে খাবার দেবে ভাবতে পারেনা। ‘মরদটা তো ছোট চাষাই ছিল বটেক, কিন্তু পারলে নাই, অভাবে না পেরে, ফসলের দাম না পেয়ে, লোকসান হয়ে বেচে দিতে হলো জমি, চইলে গেল কাজ করতে কেরালাতে,এখন তো আর ও চাষা লয় বটে, উও তো পরিযায়ী শ্রমিক, নিজের মনে বলে বাসন্তী।’
দেশেই ক্ষেত মজুরের মজুরিতে সমতা নাই ,'জোর যার মুলুক তার' এর নীতিতে এখনো চলছে অনেক জায়গা ।দীর্ঘ বেকার বাহিনী কমিয়ে দিচ্ছে মজুরি।আর আমাদের দেশে তো এটাই বাস্তব যে মহিলারা পুরুষের তুলনায় ২০% কম মজুরি পান ,ফসলের দাম নেই, মজুরি নেই ,তার বদলে আছে কর্পোরেটের হাতে কৃষি ক্ষেত্রকে তুলে দেওয়ার চেষ্টা। ঐক্যবদ্ধ কৃষক আন্দোলন দেখিয়েছে রাস্তার লড়াইতে সরকারের স্বৈরাচারী নীতিকে পরাস্ত করা যায়। কিন্তু সরকার তো আবার ওই একই চেষ্টা করছে তাদের দেওয়া কথা রাখছে না, তাহলে লড়াই করতে হবে আরও তীব্র। বেলডাঙায় ফুলকপি ফেলে দিতে হয়েছে, চাষী তার লঙ্কার দাম কিলোতে ৩০ টাকা পেলেও আর শহরে ক্রেতা ১৫০ টাকায় কিনলে ফরেরা মাঝখান থেকে নিয়ে যাচ্ছে লাভের অংশ, চাষীর হচ্ছে লোকসান। তার মধ্যে সরকার জব কার্ডে কাজ দিচ্ছে না ,কাজ মিললেও মজুরি বাকি ,ওরা শুনছে বামপন্থীদের সহায়তায় ইউ পি এ (১) এর সময় যে কাজ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ,১০০ দিনের কাজে গ্যারান্টি সৃষ্টি হয়েছিল, বিজেপি সরকার তাতে বরাদ্দ কমিয়ে দিচ্ছে, উঠিয়ে দিতে চাইছে এই জব কার্ড ,এতে তো গ্রামের বড় অংশের মহিলা কাজ করে তাহলে কে দেখবে ,কে ভাববে বাসন্তী সরেন দের কথা, তাই ওরা ঠিক করেছে ওদের কথা যারা ভাবে সেই বামপন্থীদের নেতৃত্বে ওরা বন্ধ করবে কাজ একদিনের জন্য, কি করতে পারে ওরা এক হলে তা মালুম পাবে সরকার। তাই বাসন্তীরা নিজেদের ভালোর জন্য, মজুরি বৃদ্ধির জন্য ,ফসলের দামের জন্য কাজ করবে না ৯ই জুলাই। তাই ৯ জুলাই হরতাল, ৯ ই জুলাই গ্রাম বনধ।
লালিমা রায় ভাবছিল সকাল থেকে উঠেই চড়কির মত ঘুরতে হয় ওকে, শ্বশুরের খাওয়ার গরম জল ,স্বামী অফিস বেরোবে তার ভাত ,তার মধ্যে মেয়ে কলেজ যাবে ওর জন্য ওটস,তার মাঝখানে নিজে কোন রকমে চা খেয়েই শ্বশুরের ওষুধ ,এদিকে বরের শার্ট ইস্ত্রী হয়নি ওকে ডাকছে। মেয়ে বলছে ওর রেইন কোট টা কোথায় রেখেছে খুঁজে পাচ্ছে না ,শ্বাশুড়ি বোধহয় খানিক অনুভব করেন ওর অবস্থা। তাই অনেকক্ষণ বাদে বলছেন ,'লালি তুমি যদি পারো আমায় একটু চা দিও। 'হ্যাঁ এরকমই ব্যস্ততায় সকালটা কেটে যায় লালিমার ,বুঝতেও পারে না কিভাবে কাটল, তারপর অন্য আরেক প্রস্থ কাজ শুরু হয়। সেটা দুপুরে। আসলে সংসারকে ভালো রাখতে এটা তো করতেই হবে। কিন্তু ওর নিজেরও তো একটু সময় দরকার তাই না!
লালিমারা যে কাজ দিনের পর দিন করে যায় কোন মজুরি ছাড়া, কোন কিছুর প্রত্যাশা ছাড়া গৃহস্থালির এই কাজের পোশাকি নাম 'কেয়ারওয়ার্ক ' সারাদেশে শহুরে এলাকার ক্ষেত্রে মহিলারা ৩১২ মিনিট ও গ্রামীণ এলাকার ক্ষেত্রে ২৯০ মিনিট এই কাজে ব্যয় করে থাকেন, সেখানে পুরুষেরা শহরে দিনে গড়ে ২৯ মিনিট ও গ্রামীণ এলাকায় গড়ে ৩২ মিনিট এই ধরনের কাজে ব্যয় করেন ।স্বাভাবিকভাবেই তফাৎটা বোঝা যাচ্ছে, আসমান জমিন। একটি সমীক্ষায় প্রকাশ এই মজুরি বিহীন কাজের জিডিপিতে অবদান ৭.৫% ।টাকার অঙ্কে এটি ২২.৭ লাখ কোটি ,কিন্তু এই মহিলাদের কাজের স্বীকৃতি তো নেইই বরং প্রতিদিন বাড়ছে বৈষম্য, নির্যাতন। লালিমা ভাবে মহিলাদের অধিকার তুলে ধরতেই হবে। ও ৯ জুলাই বামপন্থীদের ধর্মঘটের মিছিলে হাঁটতে যাবে। ৯ই জুলাই হরতাল, ৯ ই জুলাই অধিকার তুলে ধরার দিন।
রিনি চোখ থেকে সানগ্লাসটা খুলে ঝাঁ চকচকে বিল্ডিং এর টপ ফ্লোরে উঠে যায় ,গিয়েই বসে যেতে হবে কম্পিউটারের সামনে। কয়েকদিন ধরে প্রজেক্টে মারাত্মক প্রেসার ,মাথা তুলতে পারছে না ,কখন যে দিন কেটে বিকেল ,সন্ধ্যে হয়ে রাত হয়ে যাচ্ছে বুঝতে পারছে না। ওরা নাকি হোয়াইট কলার এমপ্লয়ি! তথ্য প্রযুক্তিতে চাকরি করে। রিনি র বইতে পড়া মে ডে র লড়াই , ৮ ঘন্টা কাজ, তার জন্য প্রাণ দেওয়া, ওদের তো এসব ভাবতেই দেওয়া হয় না ,মাঝে মাঝেই বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে কতজনকে, রিনি ভাবে এভাবে চুপ করে থাকা যায় না ,একে এই চাপ, তারপর ওর দিকে বসের চাউনি, যেকোনো অছিলায় স্পর্শ করে যাওয়ার চেষ্টা, রিনি কিছুই বলতে পারেনি, কিন্তু আর না। ওদের চালাতে হবে লড়াই। মেয়েদের ওপর এই যৌন হয়রানি চলতে পারে না। অভয়া, তামান্নার খুনিদের যেমন শাস্তি চাই তেমনি এই কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি সহ যে কোনো অন্যায় নিয়ে মুখ খুলতে হবে ওকে, ওদের। যেমন খুশি তেমন কাজ চাপিয়েই যাওয়া চলতে পারে না, এ কথা বলতেই হবে। 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম' এর নামে ২৪ ঘন্টাই নজরদারি, সারাক্ষণ অনলাইনে হাজির থাকার দাসখত, এ চলতে পারে না।'রাইট টু ডিসকানেক্ট ' এর অধিকার নিয়ে লড়াই করতেই হবে। হয় এসপার না হয় ওসপার। ৯ জুলাই ধর্মঘটে শামিল হচ্ছেই ওরা। ৯ জুলাই হরতাল, ৯ জুলাই কাজ বন্ধ।
মিলি ফিলোসফি পড়তে পড়তে ভাবছিল যারাই মনুবাদি ভাবনায় মেয়েদের দেখে , তারাই আবার NEP করে গরিবদের পড়াশোনার অধিকার কেড়ে নিতে চায় বিশ্ববিদ্যালয় গুলোকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য গণতান্ত্রিক কাঠামোকে ভেঙে দিতে চায়। S.B ম্যাম ও বলছিলেন প্রতিবাদ করতেই হবে। মিলিও চুপ করে মুখ বুজে থাকার মেয়ে ও নয়, সবাইকে একসাথে করেই ও বলবে চল, ৯ জুলাই আমরাও সামিল হই ধর্মঘটে, আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট করে জানিয়ে দিই আমাদের সবাইকে সঠিকভাবে লেখাপড়া শেখার অধিকার দিতে হবে, মনুবাদী ভাবনা মেয়েদের ওপর চাপানো চলবে না। তাই করতে হবে লড়াই ,গড়তে হবে প্রতিরোধ। তাই ৯ জুলাই ধর্মঘট, ৯ জুলাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বনধ।
এভাবেই প্রতি অংশের মেয়েরা, মহিলারা বঞ্চনা, বৈষম্য, নির্যাতন হয়রানির শিকার। দিনের পর দিন সমাজের অন্যান্য বঞ্চনাগুলোর সাথে শুধু মহিলা হওয়ার কারণে তাদের ভোগ করতে হয় লিঙ্গ বৈষম্য। অসংখ্য অসংখ্য প্রকল্প কর্মী যারা অধিকাংশ মহিলা তারা পায় না শ্রমিকের স্বীকৃতি, তার উপরে নেই মহিলাদের সুরক্ষা, বাড়ছে নিরাপত্তাহীনতা। এসবের প্রতিকার চাইতে হবে সবার সাথে আওয়াজ তুলে, স্লোগান দিয়ে, তাই সব অংশের মেয়ে, মহিলারা আছেন ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে, অংশ নেবেন ৯ জুলাই ৯ জুলাই হরতাল ৯ জুলাই চাকা বনধ। ৯ জুলাই সাধারন ধর্মঘট।