Site icon CPI(M)

True Lies? A Trail

Mamata 1

শমীক লাহিড়ী

মমতা ব্যানার্জীর সরকারের গোটা শিক্ষা দপ্তরের শীর্ষপদাধিকারী সবাই দুর্নীতির দায়ে জেলের ঘানি টানছেন। এমনকি শিক্ষামন্ত্রীও জেলে, বিপুল অর্থের বিনিময়ে শিক্ষা দপ্তরের নানাবিধ পদের চাকরি বিক্রির অভিযোগে। এইসব মন্ত্রী আমলাদের উদ্ধার হওয়া সম্পত্তি রাজা-রাজরাদের মতোই, যদিও সামান্য ভগ্নাংশের হদিশ পাওয়া গেছে। কত যে বিদেশে পাচার হয়ে গেছে, তার ইয়ত্তা নেই। আরও কত রাঘব বোয়াল জড়িত তা এখনও জানা যায়নি।

এখন আবার পৌর দপ্তরের হাজার হাজার চাকরি বিক্রির অভিযোগ সামনে উঠে আসছে। আসলে সব সরকারী নিয়োগেই বিপুল দুর্নীতি হয়েছে। সরকারী ব্যবস্থাপনায় বেআইনি কয়লা-বালি-পাথর-গোরু পাচারের কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা তৃণমূলের সব কেষ্ট-বিষ্টুর কাছে জমা হয়েছে। এক কেষ্ট এখন তিহার জেলে গুড়-বাতাসা-নকুলদানা খাচ্ছে, কিন্তু বাকি কোনও বিষ্টুই ধরা পড়েনি, হয়তো বা দিদি-শা-মোদী’র বোঝাপড়ায়। পঞ্চায়েত থেকে নবান্ন হেন দপ্তর নেই যেখানে টাকা লুঠ করেনি শাসক দল।

সাদা শাড়ীতে দুর্নীতির কালো ছোপ

মানুষ এখন আর সাদা শাড়ী-হাওয়াই চটির সততায় বিশ্বাস করা তো দূরের কথা বরং টালির চালের নীচে, ভাই-ভাইপোদের বাড়ীতে দূর্নীতির কত টাকা লুকিয়ে রাখা আছে, সেই আলোচনাতেই ব্যস্ত। এমনকি পাড়ার তৃণমূলীরাও দিদির সততা নিয়ে আড়ালে-আবডালে ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ করছে। দুর্নীতির কালির ছোপ ছড়িয়ে গেছে সাদা শাড়ীতে।

এই অবস্থায় মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নতুন কৌশল- কাঁচের বাড়ীতে থাকলে অন্যদের দিকে বেশি করে ঢিল ছোঁড়ো। বোধহয় ভাড়া করা ভোট কুশলীর পরামর্শেই সেই কাজে ময়দানে নামিয়েছেন বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীকে। কুৎসা ও মিথ্যাচারের চিত্রনাট্যে পারদর্শী বলেই বোধহয় একে ময়দানে নামিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

চিরকূটের চিত্রনাট্য

প্রথমে তিনি বললেন – বামফ্রন্টের আমলে সবাই চিরকূটে চাকরি পেত। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর সাঙ্গ-পাঙ্গ’রা  সবাই চিরকূট খুঁজতে বেরিয়ে পড়লেন। জাল কারবারে সিদ্ধহস্ত তৃণমূলীরা একটা জাল চিঠি প্রকাশ করে জানাল যে, জনৈক মোহন লাল হাজরা নামে কোনও একজনের নাম সুপারিশ ক’রে সিপিআই(এম)-এর এক নেতার লেখা চিঠি। তৃণমূলের বশংবদ কিছু সংবাদমাধ্যমও হৈ হৈ করে প্রচারে নামল। তারপর দেখা গেল এই নামে কোনও ব্যক্তি কস্মিনকালে ঐ বিদ্যালয়ে চাকরি পায়নি বা চাকরি করে নি। এমনকি তিনি নিজেই জানালেন যে, তিনি দলিল লেখকের কাজ করেন এবং সিপিআই(এম) দলের সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই বা ছিল না।

এই মিথ্যার বেলুন চুপসে যাওয়ার পর ব্রাত্য বসু হঠাৎই আবিস্কার করলেন – সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী মিলি চক্রবর্তী নাকি এরকমই এক চিরকূটে চাকরি পেয়েছিলেন ১৯৮৭ সালে। প্রমান হিসাবে তার দলের দুর্নীতির দায়ে জেলখাটা মুখপাত্র একটা কাগজ ট্যুইট করলেন। জেল খাটা অভিযুক্তের এই কাগজ আবার তিনি সাংবাদিকদের দেখালেন। তারপর দেখা গেল এই চিঠিটা সরকারী আইন অনুযায়ী লেখা কাজে যোগদান পত্র। এখন ঢোক গিলে সত্যে ব্রাত্য বলছেন – মুখ্যমন্ত্রী অনুমতি দিলে তদন্ত হবে। ২০১১-২০১৪ সাল পর্যন্ত ব্রাত্যবাবু তো নিজেই উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রী ছিলেন, তখন কিছুই জানতেন না? ১২ বছর সরকার চালাবার পর অবসরপ্রাপ্ত মিলি চক্রবর্তী চিরকূটে চাকরি পেয়েছিলেন এই মহাআবিস্কার কার অনুপ্রেরণায়? করুন না তদন্ত। গ্যারান্টি দেওয়া যায় মিলি চক্রবর্তী বা সুজন চক্রবর্তী কারুরই প্যানিক এ্যাটাকও হবে না বা মোদীর দরবারে মাথাও ঠুকবেন না বাঁচবার জন্য।

নতুন গল্প সিএজি রিপোর্ট

এখন ব্রাত্যবাবু আর এক গল্প ফেঁদেছেন ২০১৮ সালে প্রকাশিত সিএজি’র ৬নং রিপোর্ট নিয়ে। এটা সবারই জানা কম্পট্রোলার এ্যান্ড অডিটার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার এবং অন্যান্য বিভিন্ন সরকারী ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার আর্থিক এবং অন্যান্য কাজের মূল্যায়ন করে তাদের রিপোর্ট প্রস্তুত করে। এই রিপোর্ট প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা সংস্থা তাদের যে তথ্যাবলী দেয়, সেটাকেই ভিত্তি করে কাজ করে সিএজি। সিএজি চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রস্তুত ও প্রকাশ করার পূর্বে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছ থেকে উত্তর এবং প্রতিক্রিয়া চেয়ে পাঠায়। সিএজি রিপোর্ট সংসদ/বিধানসভায় সাধারণ ভাবে পেশ করা হয় এবং সংসদ/বিধানসভার পাবলিক এ্যাকাউন্টস কমিটি প্রয়োজন ভিত্তিক এই রিপোর্টের ভিত্তিতে তাঁদের মতামত জানায়।

২০১৮ সালে প্রকাশিত সিএজি-র পশ্চিমবঙ্গ সরকার সম্পর্কিত রিপোর্ট বিধানসভাতে পেশ করা হয়েছিল কি? যদি না করা হয়, তাহলে প্রশ্ন ওঠে কেন তৃণমূল সরকার এই রিপোর্ট বিধানসভায় পেশ করেনি? আর যদি পেশ করে থাকে, তাহলে  পাবলিক এ্যাকাউন্টস কমিটি এই রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে তাদের মতামত জানায়নি কেন? যদি জানিয়ে থাকে, তাহলে কি তা প্রকাশ্যে আনা হয়নি কেন?

কি ছিল তৃণমূল সরকারের বক্তব্য

এই রিপোর্ট চূড়ান্ত করার আগে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মতামত সিএজি জানতে চায়। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে এই রিপোর্টে উল্লিখিত অসামঞ্জস্য বিষয়ে সরকার তার উত্তর দিয়েছিল। তখন পাবলিক এ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন ডা. মানস ভুঁইঞ্যা। সে সময় তিনি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করে ফেলেছেন। শিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য। সবাই তৃণমূলের। কি উত্তর দিয়েছিল তৎকালীন তৃণমূলের সরকার ও স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান?

২০১০-২০১৬ এই সময়কালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের কার্যকলাপ নিয়ে সিএজি ৬নং রিপোর্ট প্রকাশ করে। এই রিপোর্টের ৭২নং পাতায় উল্লেখ করা আছে কেন্দ্রীয় রেকর্ড সংরক্ষণ আইনের ২০০৬ সালের সংশোধনী অনুযায়ী পরীক্ষার নথি সংরক্ষন ন্যূনতম ৩ বছর করতে হবে। কিন্তু এই রেকর্ড রাখা হয়নি। কেন রাখা হয়নি? এমনকি সিএজি জিজ্ঞেস করা সত্ত্বেও এই প্রশ্নের কোনও উত্তর স্কুল সার্ভিস কমিশনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। ২০১০ সালের এসএসসি’র ফলাফলের কাগজপত্র ২০১৩-২০১৪ সাল পর্যন্ত রাখা কেন হয়নি সেই উত্তর কে দেবে – ২০১১ সালের মে মাসে বিদায় নেওয়া বামফ্রন্ট সরকার নাকি পরবর্তী তৃণমূল সরকার? তাহলে এই রেকর্ড কি ইচ্ছাকৃতভাবেই ধ্বংস করা হয়েছে?

কি আছে রিপোর্টে

সিএজি রিপোর্টের ৭৩-৭৪নং পাতায় কতগুলি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করেছিল পরীক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর সংক্রান্ত গরমিলের বিষয় নিয়ে। স্কুল সার্ভিস কমিশন ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে সিএজি কে লিখিতভাবে জানায় – ভুল ডেটা প্রথমে কম্পিউটারে তুলেছিল সংশ্লিষ্ট ডেটা অপারেটাররা। এটা ধরা পড়ার পর এসএসসি সব ভুল করে তোলা এ্যাকাডেমিক মার্কস পরে সঠিক করে নেয়। এসএসসি আরও জানায় বিভিন্ন বোর্ড/বিশ্ববিদ্যালয়ের নম্বর দেওয়ার পদ্ধতি আলাদা হওয়ার জন্য কেবল এ্যাকাডেমিক মার্কসটাই সংশোধন করে নেওয়া হয়।

সিএজি রিপোর্টের ৭৫নং পাতায় প্যানেল ভুক্ত করার ক্ষেত্রে অনেকগুলি গরমিলের উল্লেখ করা হয়েছিল। এর উত্তরে তৎকালীন এসএসসি’র (২০১৭ নভেম্বর) পক্ষ থেকে জানানো হয়, মোট শূণ্যপদের ১.৫গুণ নাম প্রকাশ করা হয়েছে এবং ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ণায়ক সবাইকে ডাকা হয়েছে। তবে এক একটি পদের ক্ষেত্রে শূণ্য পদের সংখ্যা ভিন্ন ভিন্ন হওয়ার কারণে ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ণায়ক নম্বর প্রাপকদের সবাইকে সব ক্ষেত্রে ডাকা সম্ভব হয়নি।

সিএজি রিপোর্টের ৭৬নং পাতায় এসএসসি’র আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলি থেকে পাঠানো তথ্য ও কেন্দ্রীয় তথ্যের গরমিলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। একইভাবে কমিশন উত্তরে জানায় যে, এই বিষয় তাদের কাছে কোনও তথ্য নেই। অথচ সিএজি’কে এই সংক্রান্ত তথ্য তারাই দিয়েছিল। তাহলে পরে বেমালুম তা চেপে গেল কেন? সৌজন্যের খাতিরে নাকি ২০১২ পরবর্তী কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দিতে?

একইভাবে সিএজি রিপোর্টের ৭৮নং পাতায় উল্লেখ করা আছে যে, কমিশন তাদের জানিয়েছে যে, সংরক্ষিত আসনের ক্ষেত্রে উল্লিখিত তথ্য সম্পর্কে কমিশনের কাছে কোনও তথ্য নেই। ঐ একই পাতায় উল্লেখ করা আছে এসএসসি’র দেওয়া তথ্যাবলী অনুযায়ী তাদের রিপোর্ট তৈরী করতে হয়েছে এবং এই তথ্যাবলীগুলিতে গুরতর ত্রুটি রয়েছে। এমনকি যে তথ্যাবলী দেওয়া হয়েছে কমিশনের পক্ষ থেকে সেগুলির সমর্থনে কোনও কাগজপত্র দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ কমিশন যে সব সঠিক তথ্য দিতে পারেনি বা দেয়নি একথা সিএজি’র এই রিপোর্টের বিভিন্ন জায়গায় উল্লেখ করা আছে।

সিএজি রিপোর্টের ৭৯নং পাতায় সিএজি রাজ্য সরকারের কাছে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৬টি নির্দিষ্ট সুপারিশ পাঠিয়েছিল। কিন্তু ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত সরকার এই সুপারিশগুলো সম্পর্কে তাদের বক্তব্য  বা উদ্যোগ কিছুই জানায়নি।

কোনটা ঠিক?

এখন প্রশ্ন – তাহলে ২০১৭ সালে এসএসসি এই রিপোর্ট সংক্রান্ত বিষয় যে যে উত্তরগুলো দিয়েছিল, বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী কি তার বিরোধিতা করছেন? ব্রাত্যবাবু ২০২১ সালের ১০ই মে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জেল যাত্রার পর রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী হয়েছেন। গত দেড় বছরে এই রিপোর্টের কথা একবারও বলেননি কেন? তৎকালীন এসএসসি’র চেয়াম্যান, বর্তমান জেল নিবাসী সুবীরেশ ভট্টাচার্য’র পাঠানো উত্তরগুলো ভুল ছিল, এ কথা কি কোনোদিন উল্লেখ করেছেন? যখন নিয়োগ দুর্নীতির ছায়া কালীঘাটে পৌঁছেছে তখনই কি দৃষ্টি ঘোরানোর জন্য ৫ বছর আগে প্রকাশিত সিএজি রিপোর্ট অপ্রাসঙ্গিক ভাবে উল্লেখ করে মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতে চাইছেন? তৃণমূলের সরকার ২০১৮ সালের মার্চ মাসে প্রকাশিত এই রিপোর্টের এ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট কেন প্রকাশ করেনি?

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সিএজি’র এই রিপোর্টে ২০১১ সালের আগে এসএসসি তে যে গরমিলের কথা বলা হয়েছে, তা মূলত পরীক্ষা, মূল্যায়ন, নিয়োগ তালিকা প্রস্তুতিতে সফটওয়্যার ব্যবহার সংক্রান্ত (পৃষ্ঠা ৭৯)। এ ছাড়া অন্য কিছু বিষয়ও অবশ্য উল্লিখিত হয়েছিল।

কেন গোপন? আসলে ২০১০ সালে ঘটা তৎকালীন এসএসসি’র কিছু নিয়মতান্ত্রিক ত্রুটি ধরতে গেলে যদি ২০১১ পরবর্তী তৃণমূল সরকারের নিয়োগ দুর্নীতি সামনে চলে আসে, সেই ভয় কি তৃণমূলকে গ্রাস করেছিল? তাই কি সিএজি’কে সব তথ্য দেয়নি বা এই রিপোর্ট বেমালুম চেপে গেছিল তৃণমূল সরকার?

দুর্নীতির জন্যই তৃণমূল

পাবলিক এ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান ভারতবর্ষের সংসদীয় প্রথা অনুযায়ী বরাবর বিরোধী দলের পক্ষ থেকে কেউ হন – এটাই দেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের ৭৩ বছরের ঐতিহ্য। কিন্তু দুর্নীতির চূড়ামণি তৃণমূলের সরকার নিজেদের দুর্নীতি ঢাকার জন্যই নিজেদের পকেটের কাউকে চেয়ারম্যান করে আসছে। যেমন কংগ্রেসের জেতা বিধায়ক মানস ভুঁইঞ্যা তৃণমূলে যোগদান করার পর পাবলিক এ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছেন। তেমনই মুকুল রায় যিনি বিজেপির টিকিটে জিতেছেন কিন্তু প্রকাশ্যে বলেন তিনি তৃণমূল দল করেন – তাকেই চেয়ারম্যান করেছিল তৃণমূল। এখন আবার কৃষ্ণ কল্যানীকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে। ইনিও ২০২১ সালে বিজেপির টিকিটে জিতে আসলেও, পরে তৃণমূলে যোগদান করেন। এসবই মুখ্যমন্ত্রী নিজে উদ্যোগ নিয়ে করেছেন যাতে তার সরকারের দুর্নীতি ধরা না পরে।

একটাও চিরকূট দিদির দূতরা খুঁজে পেলেন না, শুধু একটা জাল চিঠি ছাড়া। ব্রাত্যবাবু সহ তৃণমূলের যে সব নেতা-মন্ত্রী-সাংসদ-বিধায়করা বামফ্রন্টের আমলে চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁরা কাদের চিরকূটে চাকরি পেয়েছিলেন? এখন ২০১৮ সালের সিএজি রিপোর্ট তুলতে গিয়ে আর এক বিপদের মুখে তৃণমূল। কেন সিএজি’কে তারা সঠিক তথ্য বা বেশিরভাগে ক্ষেত্রে কোনও তথ্যই দেয়নি তার জবাব ব্রাত্য বাবু দেবেন? মুখ্যমন্ত্রীর প্রাণের শিক্ষাবীদ, দুর্নীতির চূড়ামনি বর্তমান জেল নিবাসী সুবীরেশ ভট্টাচার্য যে উত্তর ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে সিএজি’কে দিয়েছিলেন, তাকে কি অস্বীকার করছেন ব্রাত্যবাবু? আপনি কি ভেবেছিলেন আপনার পার্টির কেষ্ট-বিষ্টু, কাকু-ভাইপোদের মতো রাজ্যের মানুষ ঐ অডিট রিপোর্ট পড়বে না? আপনি তো শিক্ষিত অধ্যাপক। কালীঘাটের দীক্ষা নিলেও আপনার শিক্ষা তো ধুয়েমুছে সাফ হ’য়ে যায়নি। প্রশ্নগুলোর উত্তর দিন।

তদন্ত হোক

আমরা চাই তদন্ত হোক- চিরকূটের তদন্ত হোক, বাম আমলের স্কুল/কলেজ সার্ভিস কমিশন নিয়েও নিরপেক্ষ তদন্ত হতে পারে, আপত্তি নেই। ২০১৮ সালে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী এই নিয়ে কটাক্ষ করায়, বাম পরিষদীয় দলের পক্ষ থেকে এই নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবী করা হয়েছিল। করে নি কেন তৃণমূল সরকার?

এখনও নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। আমরা কথা দিতে পারি আমাদের কেউ প্যানিক এ্যাটাক নিয়ে হাসপাতালে লুকাবে না বা বাঁচার জন্য মোদী-শা’র সাথে কোনও গোপন বৈঠকও করবে না। কিন্তু এই অছিলায় তৃণমূলের মাথাদের বাঁচানোর জন্য   গয়ংগচ্ছ তদন্ত নয়, কালীঘাট থেকে পাড়ার চুনোপুঁটি সিন্ডিকেট দালাল চক্রের সবাইকেই শাস্তি দিতে হবে।  

Spread the word