পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট সরকার প্রতিষ্ঠা হয়েছিল আজকের দিনে, ২১ শে জুন – ১৯৭৭ সালে। এই সরকারের প্রতিষ্ঠা হঠাৎ করে হয়নি, এর পিছনে ছিল কয়েক দশক ধরে দেশের এবং রাজ্যের মাটিতে শ্রেণী এবং গণআন্দোলনের এক বিরাট অধ্যায়। সীমিত সাংবিধানিক ক্ষমতার রাজ্য সরকারে কেন মানুষ বামপন্থীদের নির্বাচিত করলেন সেই ইতিহাস বুঝতে হলে আমাদের কিছুটা পিছন ফিরে তাকাতে হবে। আজকের প্রজন্মের সেই সংগ্রামের ইতিহাস জানা প্রয়োজন, ভোটের লড়াইতে জয়টুকুই কেবল বামপন্থীদের ইতিহাস নয় এই উপলব্ধি তাদের মধ্যে থাকতে হবে। তবেই আগামীদিনের লড়াইতে তারা উৎসাহ, উদ্দীপনা নিয়ে সংগ্রামে অংশগ্রহণ করবেন, জনগণকে সফলভাবে নেতৃত্ব দেবেন।
ভারতে কমিউনিস্ট পার্টি গড়ে উঠেছিল প্রবাসে – রাশিয়ার তাসখন্দে, ১৯২০ সালে। সেখানের সেই পার্টি গঠন হবার খবর পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল এদেশের বিপ্লবীদের কাছে। একইসময়কালে ভারতে শ্রমিকদের সংগঠন গড়ে ওঠে, কৃষকদের সংগঠিত হতে আরো কিছুটা সময় লেগেছিল। জওহরলাল নেহরু, সুভাষচন্দ্র বসু এবং মহম্মদ আলি জিন্না’র উপস্থিতিতে লখনউতে ছাত্রদের সংগঠনের কাজ শুরু হয়েছিল, গড়ে ওঠে AISF। ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামে যারা কংগ্রেসের মঞ্চের বাইরে থেকে আন্দোলন চালিয়ে গ্রেফতার হয়ে আন্দামানের সেলুলার জেলে বন্দি ছিলেন তাদের বেশিরভাগই জেলের মধ্যে থাকতে এবং জেলের বাইরে এসে কমিউনিস্ট পার্টির কাজের সাথে যুক্ত হলেন। সারা দেশজূড়ে একের পর এক গণ আন্দোলন (শ্রমিক, কৃষক এবং দুর্বার ছাত্র আন্দোলন) , স্বাধীনতার লক্ষ্যে দেশের শ্রমিকেরা অনেকগুলি আন্দোলন গড়ে তোলেন, সর্বভারতীয় ধর্মঘটও হয় (১৯৪৬ সালের ২৯শে জুলাই), সারা দেশের জনগণের জান বাজি রেখে লড়াই। নৌ বিদ্রোহের ঘটনা – এতে কমিউনিস্টদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। এই সময়কালে ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে যায় ভারত স্বাধীন হতে চলেছে – যারা বলেন স্বাধীনতার ইতিহাসে কমিউনিস্টদের কি কাজ ছিল তারা আরেকবার ইতিহাসের পাতা উল্টে দেখে নিতে পারেন। স্বাধীনতার আগেও ১৯৪৬সালে বেঙ্গল লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলিতে জ্যোতি বসু রেলশ্রমিকদের পক্ষে থেকে, রতনলাল ব্রাহ্মণ চা ক্ষেত্র থেকে এবং কৃষকদের প্রতিনিধি হিসাবে রুপনারায়ন রায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে কমিউনিস্টরা জনগণকে সাথে নিয়েই সংগ্রামের সামনের সারিতে ছিলেন।
দেশ স্বাধীন হবার পরে ভারতে কমিউনিস্টদের কাজের ধারা কিভাবে হবে, রাষ্ট্রের চরিত্র এইসব নিয়ে পার্টির অভ্যন্তরে বিতর্ক তৈরি হয়, ১৯৫৪ সালে পালঘাট কংগ্রেসে সেই বিতর্ক তীব্রতা পায়। বিতর্ক চলাকালীন ১৯৫২, ১৯৫৭, ১৯৬২ সালের নির্বাচনগুলীতে কমিউনিস্ট পার্টির উল্লেখযোগ্য সাফল্য লাভ হয়েছিল। ১৯৬২’তে চীন-ভারত সংঘর্ষের ঘটনা হলে এই বিতর্ক আরও তীব্র হয়ে ওঠে। বারট্রান্ড রাসেল চীন-ভারত সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে “আনআর্মড ভিক্টরি” লিখেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে পার্টির মধ্যে যুদ্ধের মাধ্যমে সমাধানের পক্ষে ছিলেন যারা তাদের সাথে সহমত হতে না পেরে পার্টির ন্যাশনাল কাউন্সিল (জাতীয় পরিষদ) থেকে ৩২ জন বেরিয়ে আসেন। মতাদর্শের প্রশ্নে আপোষহীন লড়াইতে এরা আস্থাশীল ছিলেন এবং সীমান্তযুদ্ধ সম্পর্কে আলাপ আলচনার মধ্যে দিয়েই সমাধান সম্ভব মনে করতেন। পরে এরা পার্টি কংগ্রেসের আহ্বান রাখেন। অন্ধ্রপ্রদেশের তেনালি’তে কনভেনশনের (বিশেষ অধিবেশন) মধ্যে দিয়ে সিদ্ধান্ত হয় ১৯৬৪ সালে কলকাতায় কমিউনিস্ট পার্টির সপ্তম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে। এভাবেই গড়ে ওঠে সিপিআই(এম)।
সারা দেশের সাথে সাথে পশ্চিমবঙ্গে সিপিআই(এম) গড়ে ওঠার পর সমমনভাবাপন্ন পার্টিগুলীকে সাথে নিয়ে পথ চলা শুরু হয়। এই প্রেক্ষিতে ১৯৩৬ সালে জর্জি দিমিত্রভের যুক্তফ্রন্টের তাত্বিক ব্যাখাকে মাথায় রাখতে হবে। ১৯৬৭ সাল নাগাদ পশ্চিমবঙ্গে প্রথম যুক্তফ্রন্ট সরকার তৈরি হয়, পরে ১৯৬৯ সালে দ্বিতীয় যুক্তফ্রন্ট সরকার। দুই ক্ষেত্রেই সিপিআই(এম) উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিল, এই দুই সরকার গঠনের সময়েই ফার্স্ট পার্টি ছিল সিপিআই(এম), তা সত্ত্বেও বাংলা কংগ্রেসের অজয় মুখার্জিকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মেনে নিয়ে জ্যোতি বসু উপমুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। জনগণের স্বার্থ রক্ষা করার ক্ষেত্রে গণআন্দোলনের নিরবিচ্ছিন্ন ধারা এবং যুক্তফ্রন্টের অভিজ্ঞতা থেকে রাজ্যের মানুষ বুঝে নেন তাদের প্রকৃত নেতৃত্ব বাম্পন্থিরাই দিতে পারেন। তাই পরিকল্পনা করেই রাজ্যে প্রথমে রাস্ট্রপতি শাসন জারী করে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হল, পরে ১৯৭২ সালে নির্বাচনের নামে প্রহসন করা হয়েছিল। জাল ভোটের ব্যাপক ব্যাবহার করা সত্বেও সেই নির্বাচনে বামপন্থীদের প্রার্থীরা জয়লাভ করেছিলেন, যদিও এই নির্বাচনকে মান্যতা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হওয়ায় পরের পাঁচ বছর বিভিন্ন আসনে জয়ী বামপন্থীদের মধ্যে সিপিআই(এম)’র কেউ বিধানসভার কাজে অংশগ্রহণ করেন নি, কোন বিধায়ক ভাতা কিংবা আইনগত সুযোগ সুবিধা নেন নি। কংগ্রেস নেতা সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের নেতৃত্বে রাজ্যে মানুষের উপরে ব্যাপক হারে আধা ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাস কায়েম করা হয়েছিল। কমিউনিস্টদের সাথে সাথে জনগণের উপরেও সেই আক্রমন নেমে এসেছিল। ফলে জনমানসে গনতন্ত্রের জন্য আকুতি তৈরি হয়েছিল।
এরই কয়েকবছর পরে ১৯৭৫ সালে ইন্দিরা গান্ধীর নির্দেশে দেশজুড়ে জরুরী অবস্থা জারী করে মানুষের অর্জিত গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল ইসলাম, সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতাকেও সংবাদপত্রে সেন্সর করা হত, যা কিছুতে জনগন উদ্বুদ্ধ হতে পারেন, উৎসাহিত হতে পারেন সেইসবকিছুকে কলমের খোঁচায় বাতিল করা চলতো। সভা সমিতির অধিকার কেড়ে নেয়া হল। ব্যাপক হারে গ্রেফতার করা হয়। গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই শুরু হল। রাজনীতি থেকে প্রায় সরে যাওয়া জয়প্রকাশ নারায়ন আবার একবার উঠে এলেন জনগণের মাঝে। কলকাতায় তার আসার দিনে যে সমাবেশ হয়েছিল তা আমার দেখা সর্বকালের সেরা জনসমাবেশের অন্যতম। দমবন্ধকরা পরিবেশের বিরুদ্ধে সর্বস্তরে মানুষের মধ্যে লড়াইয়ের মেজাজ তৈরি হয়ে গিয়েছিল।
জরুরী অবস্থা প্রত্যাহার হওয়ার পরে লোকসভা নির্বাচন হয়। নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয় এবং দেশের ক্ষমতায় বসে জনতা পার্টির সরকার। এই নির্বাচনের আগে আমাদের পার্টির মধ্যে থেকে জ্যোতি বসু এবং প্রমোদ দাশগুপ্ত উদ্যোগ নেন অন্যান্য দলগুলির সাথে আলোচনা শুরু করার বিষয়ে। সেই সময়ে যৌথ লড়াইয়ের আহ্বানের ধারা বেয়েই গড়ে উঠল বামফ্রন্ট। লোকসভা নির্বাচনে জনতা পার্টির সাথে বামফ্রন্টের বোঝাপড়া সফল হয় এবং নির্বাচনে অভাবনীয় সাফল্য আসে। এরপরেই কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নেয় বিধানসভা নির্বাচন আয়োজন করার। সেই নির্বাচনে বামফ্রন্ট এবং জনতা পার্টির মধ্যে আসন সম্পর্কিত সমঝোতা পর পর তিনবার আলোচনা হওয়ার পরেও ব্যার্থ হলে প্রমোদ দাশগুপ্ত সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দেন আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্ট একাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। নির্বাচনে বামফ্রন্ট অভুতপূর্ব সাফল্য লাভ করল, রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত হল বামফ্রন্ট সরকার – রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হলেন জ্যোতি বসু। রাইটার্স থেকে ঘোষণা করা হল সেই সরকার কেবলমাত্র মহাকরন থেকে সরকার পরিচালনার কাজ করবে না, ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রিত করে মানুষের কাছে পৌঁছান হবে। বামফ্রন্ট সরকার শপথ নেওয়ার পরে প্রথম ক্যাবিনেট বৈঠকের সিদ্ধান্ত সমস্ত রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি। পরে বহুযুগ ধরে চলা ইউনিয়ন বোর্ডের নামে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যাবস্থাকে নাকচ করে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত গঠন করা হল। প্রান্তিক মানুষজন ক্ষমতার কেন্দ্রে উঠে এলেন – তাদের নেতৃত্ব দিলেন বামপন্থীরা।
জরুরী অবস্থা প্রত্যাহার হওয়ার পরে লোকসভা নির্বাচন হয়। নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয় এবং দেশের ক্ষমতায় বসে জনতা পার্টির সরকার। এই নির্বাচনের আগে আমাদের পার্টির মধ্যে থেকে জ্যোতি বসু এবং প্রমোদ দাশগুপ্ত উদ্যোগ নেন অন্যান্য দলগুলির সাথে আলোচনা শুরু করার বিষয়ে। সেই সময়ে যৌথ লড়াইয়ের আহ্বানের ধারা বেয়েই গড়ে উঠল বামফ্রন্ট। লোকসভা নির্বাচনে জনতা পার্টির সাথে বামফ্রন্টের বোঝাপড়া সফল হয় এবং নির্বাচনে অভাবনীয় সাফল্য আসে। এরপরেই কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নেয় বিধানসভা নির্বাচন আয়োজন করার। সেই নির্বাচনে বামফ্রন্ট এবং জনতা পার্টির মধ্যে আসন সম্পর্কিত সমঝোতার চেষ্টা পর পর কয়েকবার আলোচনা হওয়ার পরেও ব্যার্থ হলে প্রমোদ দাশগুপ্ত সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দেন আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্ট একাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে, স্লোগান ছিল “স্বৈরাচারী কংগ্রেস এবং ঐক্যবিরোধী জনতা পার্টিকে পরাস্থ করুন, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে বামফ্রন্ট প্রার্থীদের জয়ী করুন”। নির্বাচনে বামফ্রন্ট অভুতপূর্ব সাফল্য লাভ করল, রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত হল বামফ্রন্ট সরকার – রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হলেন জ্যোতি বসু। রাইটার্স থেকে ঘোষণা করা হল সেই সরকার কেবলমাত্র মহাকরন থেকে সরকার পরিচালনার কাজ করবে না, ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রিত করে মানুষের কাছে পৌঁছান হবে। বামফ্রন্ট সরকার শপথ নেওয়ার পরে প্রথম ক্যাবিনেট বৈঠকের সিদ্ধান্ত সমস্ত রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি। পরে বহুযুগ ধরে চলা ইউনিয়ন বোর্ডের নামে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যাবস্থাকে নাকচ করে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত গঠন করা হল। প্রান্তিক মানুষজন ক্ষমতার কেন্দ্রে উঠে এলেন – তাদের নেতৃত্ব দিলেন বামপন্থীরা।
রাজ্যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, শান্তিপ্রতিষ্ঠা এবং একইসাথে বিরোধী দলের কর্মীদের প্রতি কোনোরকম হিংসাত্মক ঘটনার প্রতিরোধে স্পষ্ট অবস্থান নেয় বামফ্রন্ট সরকার এবং বামপন্থী দলসমুহ। গরীব কৃষকসহ ক্ষেতমজুরেরা যখন তখন জমি থেকে উচ্ছেদের বিপদ সম্পর্কে ভয়মুক্ত হন – তাদের অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়। কেন্দ্র রাজ্য সম্পর্ক পুনর্বিন্যাস, দেশের ফেডারাল কাঠামোকে যথাযথ আকার দিতে বামফ্রন্ট সরকার এবং তার মুখ হিসাবে জ্যোতি বসুর কৃতিত্ব কিছুতেই ভোলা যাবে না। বামফ্রন্ট সরকার প্রতিষ্ঠার পরেই আমাদের রাজ্য খাদ্য উৎপাদনে স্বনির্ভর হয়ে ওঠে। কৃষি উৎপাদনের সেই শক্ত ভিতের উপরে দাঁড়িয়েই শিল্পস্থাপনের দিকে এগোনোর সিদ্ধান্ত হয়। রাজ্যের মানুষকে সাথে নিয়ে এক ধারাবাহিক উন্নতির ইতিহাসই হল বামফ্রন্ট সরকার। এই সরকারের কাজ আজকের এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এক শিক্ষণীয় বিষয়।
আজকের দিনে সারা দেশে রাজনৈতিক সংস্কৃতির অবনমন হচ্ছে। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় স্পষ্ট সেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। তবু একথা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় ৩৪ বছরে বামফ্রন্ট সরকার পরিচালনার ফলে আমাদের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তার নির্যাস মাথায় রাখতে হবে। রাষ্ট্রকাঠামো, সমাজের মাথায় চেপে বসে থাকা ক্ষমতাশালী শ্রেনীর প্রকৃত রুপ এবং সংশ্লিষ্ট উপরিকাঠামো ব্যাবহার করে জনগণকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নিরন্তর লড়াই, রাজ্য সরকারের সীমাবদ্ধ সাংবিধানিক ক্ষমতা সত্বেও বিভিন্ন কাজের সাফল্য সম্পর্কে জনমানসে উন্নত রাজনৈতিক চেতনার প্রচার এসবকিছু আমাদের চেতনাকে শান দিতে কাজে লাগাতে হবে। মনে রাখতে হবে, মানুষকে জমির প্রশ্নে পিছনে টেনে রাখার যে পশ্চাদপদ, প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতি বহুবিধ মিথ্যাচার আশ্রয় করে ক্ষমতায় এসেছে এর বিরুদ্ধে জনগণের ব্যাপক অংশকে সাথে নিয়ে সঠিক, প্রগতিশীল গণআন্দোলন করেই জনগণকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সেই লড়াই থেকে বামপন্থীরা কখনো সরে না, সরে নি। সেই লড়াই এই রাজ্যের মাটিতে বামপন্থীরা এগিয়ে নিয়ে যাবে, মানুষকে পিছনে টেনে রাখতে যাবতীয় বিভাজনের রাজনীতিকে পরাস্থ করা হবে। আমরাই সেই কাজ করব, মানুষকে সাথে নিয়ে সেই কর্তব্যের দায়িত্ব আমাদেরই।
২১ শে জুন – ১৯৭৭ সালে পশ্চিমবঙ্গে প্রতিষ্ঠিত হয় বামফ্রন্ট সরকার। এই সরকার গড়ে উঠতে যে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এবং সরকারের উল্লেখযোগ্য সাফল্য মূলত এই দুটি প্রশ্ন নিয়ে রাজ্য ওয়েবটিম হাজির হয়েছিল কমরেড বিমান বসুর সামনে। কমরেড বিমান বসু ওয়েবসাইটকে একটি সাক্ষাতকার দেন। সেই ভিডিওটিও আজ ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। কমরেড বিমান বসু প্রেক্ষাপট ও সাফল্য ব্যাখ্যায় যা বলেছেন তারই একটি সংক্ষেপিত রুপ লিখিত আকারে প্রকাশিত হল।