Site icon CPI(M)

চে’র স্বপ্ন-কিউবা ও আজকের বিশ্ব : তাপস সিনহা

১৪ জুন ২০২২ (মঙ্গলবার)

কিউবার বিপ্লবীদের উদ্দেশ্যে চে গুয়েভারা ‘বৈপ্লবিক চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্পর্কে’ শীর্ষক এক বক্তৃতায় বলেছিলেন : ‘এই হাভানায় মাস কয়েক আগে কয়েকজন সদ্য পাস করা চিকিৎসকদের বলা হয়েছিল, আপনারা গ্রামে যান। গ্রামাঞ্চলের গরিব মানুষের জন্য কিছু করুন। কিন্তু শহুরে জীবনের স্বাচ্ছন্দ্য ছেড়ে তাঁরা গ্রামে যেতে অস্বীকার করেন। কেউ কেউ আবার গ্রামে যাওয়ার জন্য ক্ষতিপূরণেরও দাবি জানান। অবস্থাপন্ন ঘরের এইসব ছেলেদের পরিবর্তে যদি অপেক্ষাকৃত দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েরা চিকিৎসার পেশাদারী জীবনে প্রবেশ করতে চান, তখন কী হবে?

যদি কোনো এক জাদুমন্ত্রে গ্রামের কৃষক পরিবার থেকে আসা দু’তিনশো যুবক এই মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে একসঙ্গে পাস করে বেরোয়? সেক্ষেত্রে নিশ্চিত কৃষক পরিবার থেকে আসা সেই সমস্ত ছেলেমেয়েরা সরকারের প্রস্তাবে অসীম উৎসাহে নিজের নিজের গ্রামের জনগণের চিকিৎসা পরিষেবায় নেমে পড়বেন। আজ থেকে ছয়-সাত বছর পর যখন শ্রমিক-কৃষক ঘরের সন্তানরা চিকিৎসা বিজ্ঞানের পেশাদারি যোগ্যতা লাভ করবেন, তখন এই ঘটনাই আমরা প্রত্যক্ষ করবো…।’

“HAVANA, CUBA – APRIL 4: Steel outline of Ernesto \””Che\”” Guevara\’s face aside the Ministry of the Interior building, where he once worked, situated in Revolution Square, Havana, Cuba. The picture was taken on April 4, 2011. Guevara was an Argentinian Marxist revolutionary and a major figure of the Cuban Revolution. His face has become a symbol of rebellion. Under the image is Guevara\’s motto \””Hasta la victoria siempre\”” (Until victory always).”

চে-র সেই স্বপ্ন আজ বাস্তবায়িত।

লাতিন আমেরিকার বলিভারিয়ান বিপ্লব বিশেষজ্ঞ স্টিভ ব্রুয়ার লিখছেন, ‘আমি যে এলাকায় বাস করতাম সেখানে প্রায় একশো পঁচিশটি কৃষক পরিবারের বাস। তারা কেউই ইংরাজি জানতেন না। কেউই কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পার করেননি। আজ সেখানে এগারো জন ছেলেমেয়ে ছয় বছরের সম্পূর্ণ মেডিক্যাল কোর্সে ‘মেদিসিনা ইন্‌তেগ্রাল্‌ কোমুনিতারিয়া’ (কম্প্রিহেনসিভ কমিউনিটি মেডিসিন) যোগ দিয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছে কিছু স্কুল পাস করা ঊনিশ বছর বয়সের ছাত্রছাত্রী। আবার কারোর বয়স ত্রিশের কাছাকাছি। কেউ সন্তানের মা। তারা স্বপ্ন দেখেন, চে-র মতো তারাও একদিন তাদের বৈপ্লবিক জ্ঞান ও স্পন্দন নিয়ে অন্যান্য দেশে যাবে এবং সেখানে আন্তর্জাতিকবাদী চিকিৎসকরূপে কাজ করবেন।’

এটাই কিউবা। আজ ওয়াশিংটন যখন এই গ্রহে রপ্তানি করে চলেছে মারণ সমরাস্ত্র, বিপরীতে হাভান তখন রপ্তানি করছে জীবনদায়ী স্বাস্থ্য পরিষেবা। ওয়াশিংটন পাঠায় জলপাই পোশাকের ইয়াঙ্কি সেনা। আর হাভানা পাঠায় সাদা পোশাকের ডাক্তার। ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র হয়েও বছরের পর বছর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে লড়ে যাচ্ছে কিউবা। করোনা ভাইরাসের ছোবলে এতটুকু দমে যায়নি চে-র প্রিয় দেশ কিউবা। দ্য ডিপ্লোম্যাট বলতে বাধ্য হয়েছে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় পঙ্গু হওয়া সত্ত্বেও কিউবা কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে মূল ভূমিকা নিতে সফল হয়েছে। দেশটি থেকে ইতালি, অ্যাঙ্গোলা, জামাইকা, মেক্সিকো, ভেনেজুয়েলাসহ ৩৭ টি দেশে নতুন চিকিৎসক দল পাঠানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত হাজারের বেশি চিকিৎসক ও নার্স ওই সব দেশে তারা পাঠিয়েছে। খোদ মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি বলছে, বিশ্বের ৫৯টি দেশে কিউবার ২৯ হাজারের বেশি পেশাদার চিকিৎসক কাজ করছেন।

সমাজতান্ত্রিক কিউবার জনগণ – সাথে ফিদেলের ছবি

করোনা আক্রান্ত যাত্রীকে নিয়ে ক্যারিবীয় সাগরে আটকে পড়া ব্রিটিশ জাহাজ এম এস ব্রায়েমারের গল্পটা মনে আছে? ব্রিটিশ কোম্পানি ফ্রেড ওলসেন ক্রুজ লাইনসের তৈরি জাহাজ ‘এম এস ব্রেইমার’ ৬০০ এরও বেশি যাত্রী নিয়ে নিজের দেশ থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। জাহাজে ছিল ৬৮২ জন যাত্রী এবং ৩৮১ জন ক্রু। যাত্রীদের মধ্যে ব্রিটিশ ছাড়াও কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, কলম্বিয়া, আইরিশ, ইতালি, জাপান, ডাচ, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে এবং সুইডেনের যাত্রীও ছিল। সবকিছু ঠিকঠাক মতোই চলছিল। বিপত্তি বাধে যখন জাহাজের ২০ জন যাত্রী, ২০ জন ক্রু এবং একজন চিকিৎসকসহ কয়েকজনের মধ্যে ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণ দেখা দেয়। দ্রুত তাদের জাহাজের নিজস্ব আইসোলেশনে রাখা হয়। জাহাজের ক্যাপ্টেন দারুণভাবে তার দায়িত্ব পালন করছিলেন। যাত্রীদের আসন্ন বিপদ আঁচ করতে দিচ্ছিলেন না তিনি। তবে এতে ভুল তথ্য ছড়ানোর মতো সমস্যা তৈরি হচ্ছিল। যাত্রীদের অনেকে বয়স্ক হওয়ায় চিন্তার মাত্রা ছিল আরও বেশি। সবাইকে নিজস্ব আইসোলেশনে থাকতে বলা এবং কেউ অসুস্থ বোধ করলে যেন জাহাজের মেডিক্যাল সেন্টারে যোগাযোগ করে, সেই অনুরোধ করা হয়েছিল। জাহাজের বার এবং রেস্টুরেন্ট সব সময় খোলা ছিল। দু’সপ্তাহ পর জাহাজে ৬ জন ফ্লু আক্রান্ত ব্যক্তিকে পরীক্ষা করা হয়। মেডিকেল টিম নিশ্চিত করে ৪ জন ক্রু এবং একজন যাত্রীসহ পাঁচ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যত দ্রুত সম্ভব তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল যোগাযোগ। সমস্যা হচ্ছিল সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে। ক্যাপ্টেন সিদ্ধান্ত নিলেন কাছাকাছি কোনো বন্দরে জাহাজ নোঙর করে আক্রান্ত যাত্রীদের ফ্লাইটে করে ব্রিটেন পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্তে কোনো সাড়া মেলেনি। করোনা আক্রান্ত রোগীর কথা শুনে কোন বন্দর জাহাজ নোঙরের অনুমতি দিচ্ছিল না। ২ মার্চ ক্যারিবিয়ার সেন্ট মার্টিনে কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই যাত্রা থামিয়ে দুজন যাত্রীকে নামিয়ে দেওয়া হয়। পশ্চিম ক্যারিবিয়া ও মধ্য আমেরিকার মাঝামাঝি জায়গা থেকে জাহাজটি যাত্রা শুরু করে জামাইকার দিকে। কোস্টারিকা, পানামা, কলম্বিয়া, কুরাকাও পার হয়ে ১২ মার্চ ব্রেইমার পৌঁছায় বার্বাডোসে। এর মধ্যে ৯ মার্চ জানা যায়, যে দু’জন ব্যক্তিকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল তারা বাড়ি ফিরে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কুরাকাও এবং বারবাডোসেও জাহাজটি না থেমে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ার জন্য এগিয়ে যাচ্ছিল বাহামার দিকে। ৬৮২ জন যাত্রী এবং ৩৮১ জন ক্রু বহন করা জাহাজটি বাহামায় পৌঁছায় ১৪ মার্চ। তবে বাহামাও তাদের নোঙর করার অনুমতি দেয়নি। জাহাজটি সেখানে নোঙর করতে চাইলে তাদের বলা হয় দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের ফ্রি পোর্টে (শুল্কমুক্ত নৌপরিবহন কেন্দ্র) নোঙর করতে। প্রয়োজনে খাবার, জ্বালানি এবং ওষুধ হেলিকপ্টারে করে পৌঁছে দেওয়ার কথা জানায় বাহামা কর্তৃপক্ষ। বাহামা থেকে ২৫ মাইল দূরে নোঙর ফেলে জাহাজটি। যাত্রীদের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার, জ্বালানি এবং ওষুধপত্র নেয়। কোনো বন্দরেই যেহেতু নোঙর করা যাচ্ছিল না, তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় জাহাজটি ব্রিটেনের সাউদাম্পটনে ফিরে যাবে এবং যত দ্রুত সম্ভব আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে। এরই মধ্যে সুখবর নিয়ে আসে কিউবা। কোনো জায়গায় ভিড়তে না পারা জাহাজটিকে শেষ পর্যন্ত নিজেদের দেশে ভিড়তে দেয় তারা। কিউবা জানায়, এম এস ব্রেইমার মেরিয়েল বন্দরে নোঙর করতে পারে। যাত্রীদের সেখানে নেমে বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য চারটি ফ্লাইট ঠিক করে দেওয়া হয় এবং জরুরি প্রয়োজনে তারা আক্রান্তদের পরিষেবা দেবে বলেও জানায়। ব্রিটেনের অনুরোধ ফিরিয়ে দিতে পারেনি কিউবা।

আসলে এটাই চে গুয়েভারার কিউবা।

‘বিপ্লবী হতে চাও? বিপ্লবের প্রথম শর্ত, শিক্ষিত হও।’ এটাই ছিল চে-র বিপ্লবী শিক্ষা।

এভারেস্ট জয় প্রেরণা যুগিয়েছিল চে গুয়েভারাকেও। বলিভিয়ার জঙ্গলে গেরিলা বাহিনীকে তিনি বারে-বারে উদ্দীপ্ত করতেন এভারেস্টকে হারাতে মানুষের মরনপণ লড়াইয়ের কথা বলে। বলিভিয়ার লড়াইকে তিনি তুলনা টানতেন এভারেস্ট জয়ের সঙ্গে। বলতেন, বারংবার হেরে মানুষ কী কখনও ছেড়ে দিয়েছেন এই চরম ঝুকির বিপদজনক লড়াই! গেরিলা যুদ্ধও অনেকটা তেমন, একদিন আমরা জিতবই। চে বলতেন, ‘আমার পরাজয় মানে এই নয় যে জিত হবে না। কত মানুষ এভারেস্ট উঠতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু মোদ্দা কথা হলো: মানুষই এভারেস্ট জয় করেছেন’।

আর সেই জয়ের জন্যই ১৯৬৫ সালের এপ্রিলে অন্যান্য দেশের মুক্তির সংগ্রামে স্বশরীরে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে কিউবা ত্যাগ। কিছু সময় আফ্রিকার কঙ্গোতে অবস্থান এবং পরে ফিদেল কাস্ত্রোর ব্যবস্থাপনায় গোপনে কিউবায় প্রত্যাবর্তন। ১৯৬৬ সালের নভেম্বরে বলিভিয়ার নিপীড়িত মানুষের জীবনযুদ্ধে ছদ্মবেশে বলিভিয়ায় প্রবেশ। কিউবান বিপ্লবী ও বলিভিয়ার নিপীড়িত মানুষদের নিয়ে গেরিলা বাহিনী গঠন ও বলিভিয়ার সামরিক সরকারের উৎখাতের জন্য গেরিলা অভিযান শুরু। একের পর এক সফল অভিযান। সারা বিশ্ব তখন আন্দোলিত। নিদারুণ ঝঞ্চা বিক্ষুদ্ধ প্রতিকূল সময়ের এক বিরল যোদ্ধা ও সেনাপতি। ৮ অক্টোবর ১৯৬৭ সালে আমেরিকার বংশবদ প্রতিক্রিয়াশীল বলিভিয়ান সামরিক বাহিনীর হাতে আহত এবং ৯ অক্টোবর ওয়াশিংটনের নির্দেশে সরাসরি গুলির আদেশে নিহত।

কী ছিল চে গুয়েভারার স্বপ্ন? বন্দি চে-র কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কেন তিনি এসেছেন বলিভিয়ায়? চে-র পাল্টা প্রশ্ন ছিল, ‘আপনি কি বলিভিয়ার কৃষকদের জীবনের করুণ দশা দেখতে পাচ্ছেন না? তাদের অবস্থা প্রায় বর্বর যুগের মানুষদের মতো, দারিদ্র্যপীড়িত এমন এক জীবন যা হৃদয়কে উদ্বেলিত করে। একটি মাত্র ঘর, সেখানেই থাকা-ঘুমানো-রান্নাবান্না, পরবার মতো জামা তাদের নেই, প্রায় পশুবৎ এই জীবন।’ প্রশ্নকর্তা তাঁকে বলেছিলেন যে, কিউবার কৃষকদের অবস্থাও তো প্রায় একইরকম। জবাবে চে বলেছিলেন, ‘সেটা এখন আর সত্যি নয়। আমি অস্বীকার করছি না যে, কিউবাতে দারিদ্র্য নেই, তবে কৃষকরা অন্তত জীবন পাল্টাবার আশা ফিরে পেয়েছে। অন্যদিকে বলিভিয়ার কৃষকদের জীবন আশাহীন এক অস্তিত্ব, জন্মেই যে-অন্ধকার তারা দেখে, মৃত্যুও ঘটে সেই অন্ধকারে।’ তাঁর দলে বিদেশি যোদ্ধা রয়েছেন এমন অভিযোগের উত্তরে সহবন্দিদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে চে বলেছিলেন, ‘কর্নেল, এদের দিকে তাকিয়ে দেখুন, জীবনে যা চাইবার কিউবায় সবকিছুই তাদের ছিল, কিন্তু এখানে তারা এসেছে কুকুর-বিড়ালের মতো মৃত্যুবরণ করতে।’ চের সেই বিপ্লবী দলে ছিলেন উইলির মতো বিপ্লবী, ছায়াসঙ্গী হয়ে চে-র পাশে সদা-বিরাজমান, এমনকি মৃত্যুতেও তাঁর সঙ্গী। ছিল খাপ-খোলা তরবারির মতো তানিয়া, জার্মান-আর্জেন্টিনিয়ান বংশোদ্ভূত যে-তরুণী হয়েছিল গেরিলা কমান্ড্যান্ট, যাঁর ছিন্নভিন্ন দেহ হয়ে পড়েছিল শনাক্তের অযোগ্য হয়ে। চে-র মৃত্যুর মাস দেড়েক আগে যিনি বরণ করেন শাহাদাৎ। অপার এক ভালোবাসায় সকল কিছু ত্যাগে এরা হয়ে উঠেছিলেন একেবারেই বেপরোয়া, অনন্য।

১৯৬৭ সালের ১২অক্টোবর মার্কিন বিদেশ দপ্তরের একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল: ‘গুয়েভারা’স ডেথ, দ্য মিনিং অব ল্যাটিন আমেরিকা’। সেই অক্টোবরেই চের মৃত্যুসংবাদ গোটা দুনিয়া জানতে পারে। নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকা তখন লিখেছিল, ‘একজন মানুষের সঙ্গে সঙ্গে একটি রূপকথাও চিরতরে বিশ্রামে চলে গেল।’ কথাটা সত্য হয়নি। কমরেডের মৃত্যুর পর কিউবায় লাখো জনতার সামনে আবেগঘন কণ্ঠে ফিদেল কাস্ত্রো বলেছিলেন, যারা মনে করছে, চে গুয়েভারার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তাঁর আদর্শ বা তাঁর রণকৌশলের পরাজয় ঘটেছে, তারা ভুল করছে। ঠিকই। আজ শোষণ, বৈষম্য ও পরিবর্তনের প্রতীক হয়ে উঠেছে চে’র ছবি। অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে সারা বিশ্বে চে এখন অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক, অনেক বেশি জাগ্রত। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে, প্রতিবাদে ও সংগ্রামের রক্তধারায় মিশে আছেন চে। মানুষের জাগরণে অনুপ্রেরণা, প্রণোদনা হয়ে প্রতিদিনের সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। শুধু লাতিন আমেরিকা নয়, সারা বিশ্বের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের বিপ্লব, বিদ্রোহ ও উত্থানের আরও শক্তিশালী সহযাত্রী হয়ে ফিরে এসেছেন কমানদান্তে আর্নেস্তো চে গুয়েভারা। কিউবার করোনা যুদ্ধ
এখনো পর্যন্ত কিউবাতে আক্রান্তদের সংখ্যা ২৫০০ জন মৃত্যু হয়েছে ৮৭ জন, গোটা বিশ্ব জুড়ে ১৭৫ দিন ধরে কিউবার ডাক্তাররা লড়ছেন, সে হিটলারের দেশ জার্মানি হোক অথবা ঘোর বিরোধী সাম্রাজ্যবাদী দেশ আমেরিকা হোক, সকলের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে কিউবা। শুধু মাত্র ২০০ ডাক্তার পাঠিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায়।

মানবিক কিউবার গল্প ইতিহাসে লেখা থাকুক ।চে ,ফিদেলের স্বপ্নের কিউবা মানবিকতার নজীর রাখবে বলেই ১০০০ জনের মধ্য ৯ জন ডাক্তার তৈরি করে। শুধু করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ না ,সমাজের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে কিউবা।
অভিবাদন কিউবা । অভিবাদন “চে “_______________ (চে :১৪ জুন ১৯২৮ – ৯ অক্টবর ১৯৬৭ )

শেয়ার করুন