Site icon CPI(M)

The Contribution of Kakababu and Communists in Indian Freedom Struggle

সূর্য্যকান্ত মিশ্র

ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন কমরেড মুজফ্‌ফর আহ্‌মদ (কাকাবাবু)। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি গঠনের প্রথম যুগের কারিগরদের সঙ্গে তাঁকেও পরাধীন ভারতের ব্রিটিশ সরকারের দমনমূলক আচরণ, একাধিক ষড়যন্ত্র মামলার মোকাবিলা করেই মেহনতী মানুষকে সংগঠিত ও স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন সংগঠিত করতে হয়েছে। তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও লড়াই ও মতাদর্শে অবিচল থেকে পরিস্থিতির সঠিক মূল্যায়নের করে পথ চলার ক্ষেত্রে দিশাদায়ী হয়ে রয়েছে। কাকাবাবুর রাজনৈতিক জীবন শুধু ভারতে কমিউনিস্ট পার্টির গড়ে ওঠার ইতিহাসকেই সূচিত করে না, তদানীন্তন ভারতে স্বাধীনতা সংগ্রামে কমিউনিস্টদের অবদানের স্বাক্ষর হয়েও থাকবে।

১৮৮৯ সালের অবিভক্ত বাংলার নোয়াখালি জেলার অন্তর্ভুক্ত সন্দীপের মুসাপুর গ্রামে কাকাবাবুর জন্ম। তরুণ বয়সেই কলকাতায় চলে আসেন তিনি এবং জীবিকার জন্য অনুবাদকের কাজ, গৃহশিক্ষকতার কাজ সহ কিছু চাকরিও করেছিলেন। এরপর তিনি একাধিক সাহিত্য পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন, রুশ বিপ্লবের প্রভাব তাঁর মধ্যে কাজ করছিল, তিনি শ্রমিক কৃষকদের কথা তুলে ধরেছিলেন এবং তারপরে ১৯২০ সালে প্রবাসে তাসখন্দে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠার পরে বাংলায় পার্টি গঠনের কাজে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। ১৯২০ সালে কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের দ্বিতীয় কংগ্রেসে লেনিনের কলোনিয়াল থিসিস গৃহীত হওয়ার পরে ভারতের শ্রমজীবী আন্দোলনের নেতৃত্বের সঙ্গে কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের যোগাযোগ তৈরি হয়। তাসখন্দে এম এন রায়ের উদ্যোগে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠা হলেও ভারতে গোড়া থেকেই ব্রিটিশ সরকার এই বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক নজরদারি চালানোয় এবং দমনমূলক আচরণ নামিয়ে আনায় ভারতের কমিউনিস্টদের পক্ষ কাজ করা অত্যন্ত কঠিন ছিল। কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের পক্ষ থেকে ভারতের বিভিন্ন কমিউনিস্ট গ্রুপগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন এমএন রায়, বোম্বেতে এসএ ডাঙ্গে, মাদ্রাজে সিঙ্গারাভেলু চেট্টিয়ার এবং কলকাতায় মুজফ্‌ফর আহ্‌মদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন তিনি। বাংলায় কমিউনিস্ট পার্টির প্রথম সদস্য ছিলেন মুজফ্‌ফর আহ্‌মদ এবং শ্রমিকের চাকরি ছেড়ে তাঁর সঙ্গী হয়েছিলেন আবদুল হালিম।

সেই সময়ে কমিউনিস্টদের সক্রিয়তা এবং তা দমনের জন্য ব্রিটিশ সরকারের অপচেষ্টাকে বুঝতে হলে কংগ্রেসের অধিবেশনে অংশ নিয়ে কমিউনিস্টদের বিবৃতি প্রচার এবং মস্কো ষড়যন্ত্র মামলা সহ তিনটে পেশোয়ার ষড়যন্ত্র মামলা (আমার জীবন ও ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি- মুজফ্‌ফর আহ্‌মদ, ১৯৮৪, পৃষ্ঠা ১৩৩-১৩৮ দ্রষ্টব্য), কানপুর ষড়যন্ত্র মামলা এবং মীরাট ষড়যন্ত্র মামলা সহ মোট ৫টি ষড়যন্ত্র মামলায় কমিউনিস্টদের গ্রেপ্তার ও হাজতবাসের ঘটনাগুলি লক্ষ্য করতে হবে। ১৯২১ সালে আহমেদাবাদ কংগ্রেসে কমিউনিস্টদের পক্ষ থেকে প্রথম বিবৃতি প্রকাশ করে শ্রমিক ও কৃষকদের দাবি তুলে ধরে তাদের স্বার্থ রক্ষায় কংগ্রেসকে এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয়। কংগ্রেসের আহমেদাবাদ এবং গয়া অধিবেশনে পূর্ণ স্বাধীনতার ও সাম্রাজ্যবাদীদের সঙ্গে সমস্ত সংশ্রব ত্যাগের দাবিও তোলা হয় কমিউনিস্টদের পক্ষ থেকে।

কিন্তু ব্রিটিশ সরকারের প্রতিক্রিয়াও ছিল নির্মম। কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে প্রথম ষড়যন্ত্র মামলা ছিল তিনটি পেশোয়ার ষড়যন্ত্র মামলা, যেখানে কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের সহায়তায় অশেষ কষ্টভোগ করে পামির পার হয়ে যে কমরেডরা উত্তর পশ্চিম সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে এসেছিলেন তাঁদের ব্রিটিশ পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং ১ থেকে ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ডের বন্দোবস্ত করে। এই সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের মধ্যে ছিলেন মহম্মদ শফিক যিনি ১৯২০ সালে ১৯২০ সালের ১৭ অক্টোবর তাসখন্দে গঠিত ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদক হয়েছিলেন। এরপর কানপুর ষড়যন্ত্র মামলায় ব্রিটিশ পুলিশ ১৯২৩ সালে সওকত ওসমানিকে কানপুরে গ্রেপ্তার করে, কলকাতায় মুজফ্‌ফর আহ্‌মদকে গ্রেপ্তার করে এবং লাহোরে গ্রেপ্তার করে গোলাম হোসেনকে। গ্রেপ্তার হয়েছিলেন এস এ ডাঙ্গেও। তবে এম এন রায় ইউরোপে থাকায় পুলিশ তাঁর নামে মামলা দিলেও তাকে ধরতে পারেনি। পরে অবশ্য এমএন রায় কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিক থেকে বহিষ্কৃত হয়ে যান। ১২১ ধারায় এই মামলায় সরকারকে উচ্ছেদের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের হয়েছিল এবং যে বিচারক চৌরিচৌরা মামলায় ১৭২জন কৃষকের ফাঁসির হুকুম দিয়েছিলেন তিনিই কাকাবাবু সহ ধৃতদের চারবছরের সশ্রম কারাদন্ডের হুকুম দিয়েছিলেন। কাকাবাবুদের গলায় হাঁসুলি ও পায়ে লোহার মল পরিয়ে জেলে বন্দী রাখা হয়েছিল। তবে এই মামলার বিচারপর্বে সংবাদমাধ্যমে কমিউনিস্টদের লক্ষ্য সম্পর্কে যে প্রচার হয়েছিল তা পার্টির পক্ষে কিছুটা সহায়কই হয়েছিল।

১৯২৫ সালে জেলে থাকাকালীনই কাকাবাবুর মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়, যক্ষ্মার কারণে তাঁর শরীরের ওজন দ্রুত কমে যাচ্ছিল। এই অবস্থায় স্বাস্থ্যের কারণে তাঁকে প্রথমে আলমোড়ায় পাঠানো হয় এবং তারপরে নিঃশর্তে মুক্তি দেওয়া হয়। কলকাতায় ফিরে আসার পথে তিনি ১৯২৫ সালেরই ডিসেম্বরে কানপুরে কমিউনিস্ট পার্টির প্রথম সম্মেলনে যোগ দেন। সেই সম্মেলনে অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি ছিলেন মৌলানা হসরৎ মোহানী, আর সভাপতি ছিলেন সিঙ্গারাভেলু চেট্টিয়ার। ভারতের বিভিন্ন এলাকার কমিউনিস্টদের সংহত করে সেই সম্মেলনেই প্রথম পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি তৈরি হয়েছিল, যুগ্ম সম্পাদক হয়েছিলেন এসভি ঘাটে এবং জানকীপ্রসাদ বাগেরহাট্টা (পরে তিনি বহিষ্কৃত হয়েছিলেন)। পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিকে সেই সময়ে বেশ কয়েকবার গোপন বৈঠক করতে হয়েছিল এবং মীরাট ষড়যন্ত্র মামলায় ব্রিটিশ সরকার সেগুলিকে ‘ওয়ার কাউন্সিল’ নামে অভিহিত করেছিল।

বাংলায় কবি নজরুল ইসলামের সঙ্গে নবযুগ পত্রিকা প্রকাশ করে মুজফ্‌ফর আহ্‌মদ আগেই শ্রমিক কৃষকদের কথা তুলে ধরেছিলেন। কানপুর থেকে কলকাতায় ফিরে আসার পরে কাকাবাবু দেখলেন যে কংগ্রেসের লেবার স্বরাজ পার্টি ‘লাঙল’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেছে এবং তাতে কমিউনিস্টরা কাজ করছেন। ১৯২৬ সালে এই লেবার স্বরাজ পার্টিই পরিবর্তিত হয়ে ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি হয়ে গেলো এবং কংগ্রেসের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলো। আর ‘লাঙল’ পত্রিকার সম্পাদনা ও পরিচালনার ভার এসে পড়লো মুজফ্‌ফর আহ্‌মদের ওপর। শুধু কৃষকদের নয়, শ্রমিক এবং কৃষকসহ সব মেহনতীদের প্রতিনিধিত্ব করার লক্ষ্যে তিনি পত্রিকার নাম পরিবর্তন করে রাখলেন ‘গণবাণী’। ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টির মধ্যে থেকেই কমিউনিস্টরা কাজ করছিলেন এবং কংগ্রেসের থেকে ভিন্ন কর্মসূচীর কথা প্রচার করছিলেন। এরপর ১৯২৭ সালে বোম্বেতে, তারপর পাঞ্জাবে এবং তারপর মীরাটেও ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি তৈরি হলো। ১৯২৭ সালের ডিসেম্বরে কংগ্রেসের মাদ্রাজ অধিবেশনে ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টির পক্ষ থেকে একটি ইশতেহার বিলি করা হয় যা ফিলিপ স্প্র্যাটের সঙ্গে আলোচনাক্রমে কাকাবাবুই তৈরি করেছিলেন। এই ইশতেহারে ন্যাশনাল কনস্টিটিউয়েন্ট অ্যাসেম্বলি গঠনের দাবি করা হয় যাতে সার্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে সংবিধান রচনার কথা বলা হয়। ১৯২৯ সালে কলকাতায় সাইমন কমিশনের বিরুদ্ধে মিছিলে বিরাট মিছিল হয়েছিল কংগ্রেস এবং ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টির উদ্যোগে, সেখানেই ধ্বনিত হয়েছিল ইনকিলাব জিন্দাবাদ স্লোগান। এই সময়ে কাকাবাবুকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টিকে সর্বভারতীয় হিসাবে গড়ে তোলার। ১৯২৮ সালে কলকাতায় সম্মেলন করে তা করা হয়েছিল। কংগ্রেসের দোদুল্যমানতার সমালোচনা সত্ত্বেও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনে কংগ্রেসকে সমর্থন এবং কংগ্রেসের মধ্যে থেকেই কজা করা হচ্ছিল। এর আগেই ১৯২০ সালে অল ইন্ডিয়া ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৩৬ সালে তৈরি হলো অল ইন্ডিয়া কিসান সভা, অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্ট ফেডারেশন এবং প্রোগ্রেসিভ রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশন। পাঞ্জাবে আগেই তৈরি হয়েছিল নওজওয়ান ভারত সভা। কলকাতার যুব সম্মেলনে অপ্রকাশ্যে যোগ দিয়েছিলেন ভগৎ সিং।

১৯২৯ সালের ২০ মার্চে ব্রিটিশ সরকার আবার প্রত্যাঘাত হানে কমিউনিস্টদের ওপরে। মুজফ্‌ফর আহ্‌মদ সহ ওয়ার্কার্স পেজেন্টস পার্টির ৩১জনকে ১২১ ধারায় গ্রেপ্তার করে ভারতের বিভিন্ন এলাকা থেকে, এদের মধ্যে ১৮ ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যরা দেশের স্বার্থে একটি শক্তিশালী ও বদ্ধপরিকর কমিউনিস্ট পার্টি গড়ে তোলার পক্ষে চারশো পৃষ্ঠার একটি বিবৃতি দেন যা একটি ঐতিহাসিক দলিল হয়ে রয়েছে। মীরাট ষড়যন্ত্র মামলায় একসঙ্গে এতজন কমিউনিস্ট নেতা গ্রেপ্তার হওয়ায় কমিউনিস্ট পার্টির কার্যকলাপ বিঘ্নিত হয়েছিল, তবে আবদুল হালিম গ্রেপ্তার না হওয়ায় তিনি সক্রিয় ছিলেন। বোম্বেতেও এল ভি দেশপান্ডে এবং বিটিআর ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন সংগঠনে সক্রিয় ছিলেন। মীরাট ষড়যন্ত্র মামলা ভারতের ছাত্রযুবদের মধ্যে বিরাট প্রভাব ফেলেছিল।

মীরাট ষড়যন্ত্র মামলায় বন্দীরা ছাড়া পেলেন ১৯৩৩ সালের শেষলগ্নে। কলকাতায় ১৯৩৩ সালের ডিসেম্বরে বাংলার কমিউনিস্টদের উদ্যোগে পার্টির সর্বভারতীয় সম্মেলনে গঙ্গাধর অধিকারীকে সম্পাদক করে প্রভিশনাল কেন্দ্রীয় কমিটি তৈরি হয়েছিল। ১৯৪৩ সালে বোম্বাইতে পার্টির প্রথম কংগ্রেসের সভাপতিমন্ডলীর পক্ষে সভাপতির সমাপ্তি ভাষণে পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য কাকাবাবু বলেছিলেন, ‘The party has taken on itself the greatest job of its life. Let us go out to fulfil it.’ কাকাবাবুর জেলজীবনের বাইরের দিনগুলির সেই বিশাল কর্মকাণ্ডের সব বিবরণ এখানে দেওয়া অসম্ভব। কিন্তু তাঁর অবদান স্বাধীনতা সংগ্রামে পার্টির অবদান থেকে আলাদা করা অসম্ভব। আমাদের পার্টির কর্মসূচীতে (২০০০) সেই অবদানগুলিকে সংক্ষেপে দেওয়া হয়েছে।

ভারতীয় জনগণের প্রগতিশীল সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ও বিপ্লবী ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার বহন করছে কমিউনিস্ট পার্টি। শুধু পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি করাই নয়, আর্থ সামাজিক পরিবর্তনের নির্দিষ্ট কর্মসূচী নিয়ে জমিদারতন্ত্রের বিলোপ, সামন্ততান্ত্রিক আধিপত্যের অবসান, জাতপাতের নামে অত্যাচার নির্মূল করার মতো প্রগতিশীল উপাদানে সমৃদ্ধ করেছিল স্বরাজের দাবিতে আন্দোলনকে। কমিউনিস্ট পার্টির ভূমিকা দেশের বিভিন্ন বিপ্লবী ধারার যোদ্ধাদের আকর্ষণ করেছিল। এর মধ্যে পাঞ্জাবের গদর বীরেরা, ভগৎ সিংয়ের সহকর্মীরা, বাংলার বিপ্লবীরা, বোম্বে ও মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির জঙ্গী লড়াকু শ্রমিকরা এবং কেরালা ও অন্ধ্রপ্রদেশ সহ দেশের বিভিন্ন অংশের প্রগতিবাদী সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী কংগ্রেস সদস্যরাও ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তেভাগা, পুনাপ্পা ভায়লার, উত্তর মালাবার ওয়ারলি আদিবাসী, ত্রিপুরার আদিবাসীদের লড়াই এবং তেলেঙ্গানার সশস্ত্র কৃষক সংগ্রামে পার্টি নেতৃত্ব দিয়েছিল। অনেকগুলি রাজন্যবর্গ চালিত রাজ্যে জনগণের আন্দোলনে পার্টি নেতৃত্ব দিয়েছিল এবং পন্ডিচেরি ও গোয়ার মুক্তিসংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিল। জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম ও গণসংগ্রামের মুখে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ জাতীয় বুর্জোয়াদের সঙ্গে সমঝোতা করে দেশভাগের মধ্য দিয়ে ভারতকে স্বাধীনতা দেয়।

কিন্তু স্বাধীনতার পরেও কমিউনিস্টদের নিপীড়ণ সহ্য করতে হয়েছে, স্বাধীন দেশেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে, কাকাবাবুদের জেলে থাকতে হয়েছে। কিন্তু নিপীড়ণ কখনোই বৈপ্লবীক কাজে এগিয়ে যাওয়া থেকে পার্টিকে বিরত করতে পারেনি, স্বাধীনতার আগেও নয়, পরেও নয়।

Spread the word