Site icon CPI(M)

Shaheenbag Protests to be Heard on 26 February : Supreme Court

The Supreme Court on Monday deferred the hearing of PILs against the Shaheen Bagh protest to February 26 after the appointed interlocutors submitted the report in a sealed envelope.

সুপ্রীম কোর্টে শাহিনবাগ নিয়ে পরবর্তী শুনানি ২৬ ফেব্রুয়ারি

২৩ ফেব্রুয়ারি অবধি একটানা শাহিনবাগের প্রতিবাদীদের সাথে আলোচনার পর সুপ্রীম কোর্ট নিযুক্ত দুজন মধ্যস্থতাকারী সাধনা রামচন্দ্রন ও সঞ্জয় হেগড়ে সোমবার মুখবন্ধ খামে তাদের মতামত বিচারপতি এস কে কউল ও কে এম জোসেফের এজলাসে জমা করেন।দুই বিচারপতির বেঞ্চ সোমবার জানিয়েছে যে মধ্যস্থতাকারীদের রিপোর্ট পর্যবেক্ষণের পরে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহিনবাগ সংক্রান্ত মামলার শুনানি পুনরায় শুরু হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক নন্দ কিশোর গর্গ সর্বোচ্চ আদালতে একটি জনস্বার্থ মামলা করে শাহিনবাগের আন্দোলনকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করার আবেদন জানান। তাঁর যুক্তি ছিল যে একটানা দীর্ঘদিন ধরে শাহিনবাগে সিএএ-এনপিআর-এনআরসি বিরোধি আন্দোলনের জন্যই শাহিনবাগ ও সংলগ্ন এলাকায় যানজট হচ্ছে।

শাহিনবাগের প্রতিবাদীরা সুপ্রীম কোর্ট নিযুক্ত দুই মধ্যস্থতাকারীকে গোটা এলাকা ঘুরিয়ে দেখান এবং স্পষ্ট ভাবেই বলেন যে তাঁরা স্কুলের গাড়ি, এ্যাম্বুলেন্স সহ সমস্ত জরুরি পরিষেবার জন্যই যান চলাচল অব্যাহত রাখতে সর্বতোভাবে সাহায্য করলেও দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশ পুলিশ নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে একাধিক রাস্তা নিজেরাই আটকে রেখেছে। তাঁরা এটাও জানান যে কেন্দ্রের সরকারের পক্ষ থেকে সিএএ এনআরসি এনপিআর প্রত্যাহারের আশ্বাস না পাওয়া অবধি তারা শাহিনবাগ ছেড়ে নড়বেন না। তাঁরা দাবি করেন যে বন্দুকধারী হিন্দুত্ববাদী দুষ্কৃতি যারা শাহিনবাগ, জামিয়া সহ একাধিক জায়গায় আক্রমণ সংঘটিত করছে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসন কোন উপযুক্ত ব্যবস্থাই নিচ্ছে না।

সুপ্রীম কোর্ট সোমবার একথাও স্পষ্ট করে যে আবেদনকারী বা কেন্দ্র সরকার তথা দিল্লি পুলিশ কোন পক্ষকেই মধ্যস্থতাকারীদের রিপোর্ট দেওয়া হবে না ।

 এরমধ্যেই প্রাক্তন মুখ্য তথ্য কমিশনার ওয়াজাহাত হাবিবুল্লাহ সুপ্রীম কোর্টে একটি হলফনামা জমা করেছেন । ‘‘শাহিনবাগের সিএএ বিরোধী আন্দোলনের জন্য সাধারণ মানুষের কোনও অসুবিধা হচ্ছে না। প্রয়োজন ছাড়াই পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা আটকে রাখার জন্যই সমস্যায় পড়ছেন নিত্যযাত্রীরা।’’ প্রাক্তন মুখ্য তথ্য কমিশনার ওয়াজাহাত হাবিবুল্লাহ স্পষ্ট একথা জানালেন শীর্ষ আদালতকে। শাহিনবাগের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। পাশাপাশি একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের উপর যেভাবে আক্রমণ হানা হচ্ছে তা নিয়েও কড়া ভাষায় লিখেছেন হাবিবুল্লাহ।

সমাজকর্মী সঈদ বাহাদুর আব্বাস নকভি এবং ভীম আর্মি প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদও সহমত পোষণ করেছেন হাবিবুল্লাহের সঙ্গে। তিনজনে হলফনামাও জমা করেছেন শীর্ষ আদালতে। বিজেপি সদস্যরা নিজেদেরকে সচেতন নাগরিক দাবি করে সাজিয়ে গুছিয়ে কীভাবে পিটিশন দাখিল করেছেন, তাও সুপ্রীম কোর্টের সামনে তুলে ধরেন তাঁরা । বিচারপতি এস কে কউল এবং কে এম জোসেফের নির্দেশেই সাধনা রামচন্দ্রন ও সঞ্জয় হেগড়ে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে নিযুক্ত হন। হাবিবুল্লাহ ও চন্দ্রশেখর মধ্যস্থতায় সাহায্য করতে চেয়ে আবেদন করলে সুপ্রীম কোর্ট তাদেরকেও অনুমতি দেন। সেই নির্দেশের প্রেক্ষিতেই গত ১৯ তারিখে শাহিনবাগের আন্দোলনস্থলে যান হাবিবুল্লাহ। তারপর নিজের অভিমত জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টে। সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপের আবেদনও করা হয়েছে।

দুই মধ্যস্থতাকারী সঞ্জয় হেগড়ে এবং সাধনা রামচন্দ্রমও জানান, পুলিশই পথ আটকে বিপত্তি তৈরি করছে। মঞ্চে দাঁড়িয়ে তাঁরা প্রতিশ্রুতি দিতে বাধ্যও হন, ‘শাহিনবাগ থাকবে।’ শাহিনবাগের আন্দোলনকারীদের হঠিয়ে দিয়ে নিত্যযাত্রীর সুবিধার জন্য রাস্তা পরিষ্কার করার দাবি জানিয়ে একাধিক মামলা রুজু হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। শীর্ষ আদালতে চলছে তার শুনানি। ক’দিন আগেই সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ‘‘আইন মেনে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ দেখানো নাগরিকদের মৌলিক কর্তব্য ঠিকই। কিন্তু শাহিনবাগে রাস্তা আটকে আন্দোলনের জেরে বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি হতে পারে।’’ হাবিবুল্লাহ তাঁর হলফনামায় নির্দিষ্ট করেই বলেছেন, ‘‘দুঃখের বিষয়, একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষের উপর পুলিশের নৃশংসতা এবং সেই মানুষদের নিয়ে দেশজুড়ে নেতিবাচক প্রচার চালানো দেখেও আমরা নীরব দর্শক হয়ে বসে থেকেছি। আলোচনার পথে না গিয়ে বিক্ষোভ দমন করাই এখন নতুন বিধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা আমাদের সংবিধানের পরিপন্থী।’’ বর্তমান শাসক গোষ্ঠী তার রাজনৈতিক মাথাদের নির্দেশে এই প্রতিবাদ দমনে ইচ্ছা করে হিংসা তৈরি করে হামলা চালানোর কৌশল নিয়েছে বলে সঈদ বাহাদুর আব্বাস নকভি এবং ভীম আর্মি প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদও অভিযোগ করেছেন হলফনামায়।

ক্ষোভের সঙ্গে তাঁরা জানিয়েছেন, এই প্রতিবাদ-আন্দোলনের সঙ্গে কোনও যোগসাজশই নেই এমন একাধিক রাস্তায় পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে। একটি আলাদা হলফনামায় নকভি এবং আজাদ ফের অভিযোগ করেছেন, নিত্যযাত্রীদের সমস্যার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবেই পুলিশের পরিকল্পিত। দিল্লি, নয়ডা, ফরিদাবাদ সংযোগকারী রাস্তাগুলি আটকে রেখে পুলিশ অসুবিধা তৈরি করছে। তাঁরা সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছেন, অমিত শাহনি নামে এক ব্যক্তি যিনি নিজেকে সচেতন নাগরিক দাবি করে পিটিশন দাখিল করেছেন, তিনি একজন বিজেপি সদস্য। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, নাগরিক পঞ্জি, জনপঞ্জির বিরুদ্ধে শাহিনবাগের দৃঢ়চেতা আন্দোলন দমন করতে একইভাবে বিজেপি-র প্রাক্তন বিধায়ক নন্দকিশোর গর্গও সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন। যেভাবে হোক প্রতিবাদীদের হঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁরা। অন্যদিকে শাহিনবাগও জোরের সঙ্গেই জানিয়ে দিয়েছে, কেন্দ্রের এই কালা আইন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অস্তিত্বকেই সঙ্কটে ফেলে দেবে। এটি এক মরণফাঁদ। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলবেই।

Spread the word