Site icon CPI(M)

Long Live Revolution: The History

Bhagat Singh 2024

প্রাককথন

শহীদ দিবস আজ। আজ ২৩শে মার্চ, ২০২৪। আজকের দিনেই লাহোর জেলে ফাঁসি হয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের অধীনস্থ ভারতবর্ষের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান, তিন বিপ্লবীর। ভগৎ সিং, শিবরাম রাজগুরু ও সুখদেব থাপার। আজকের ভারতে অতীত ইতিহাস, ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকারের যাবতীয় কিছুকেই উগ্র দক্ষিনপন্থী, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি গ্রাস করতে চাইছে। বিজ্ঞানসম্মত ইতিহাস, ঐতিহাসিক এমনকি প্রত্নতাত্বিক সুত্রকে হয় বিকৃত করা হচ্ছে নাহলে পোস্ট ট্রুথের কায়দায় অকেজো করে দিয়ে জনগনের মগজ দখল করতে চাইছে আরএসএস। এই পরিস্থিতিতে সবার জন্য সঠিক ইতিহাস, ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকারকে চিনিয়ে দেওয়ার কাজ আমাদের, কমিউনিস্ট পার্টির। এই দায় প্রগতিশীল শিবিরের প্রত্যেকের। সেই ভাবনা থেকেই রাজ্য ওয়েবডেস্ক সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়ের সাথে যোগাযোগ করে। সুমিত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। ক্রীড়া বিশেষ করে ক্রিকেটের ইতিহাস লেখায় তার সুখ্যাতি রয়েছে। সুমিত লিখেছেন সেইসব কথাবার্তা, এদেশের ইতিহাস প্রসঙ্গে যা কিছু আমাদের বারে বারে পড়া উচিত, অন্যদেরও জানার সুযোগ করে দেওয়া উচিত।

সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়

২৩শে মার্চ, ১৯৩১। লাহোর জেলে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ফাঁসিতে ঝোলানো হয় ভগৎ সিং, শিবরাম রাজগুরু ও সুখদেব থাপার’কে। পরবর্তী প্রায় শতবর্ষ যাবৎ এই তিন জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের মহান শহীদ সমগ্র ভারতের যুব সম্প্রদায়ের কাছে সর্ববৃহৎ অনুপ্রেরণা হিসেবে চিহ্নিত। মৃত্যুর সময় পর্যন্ত সমাজ বিপ্লবের চেতনায় উদ্বুদ্ধ এই তিন চিরযুবক আজও উপমহাদেশের সর্বপ্রকার জনসাধারণের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র হিসেবে দেখা মুষ্টিমেয় মানুষদের মধ্যে পরিগনিত হন।

তবে, মনে রাখতে হবে ভগৎ সিং ও তাঁর সঙ্গীরা আকাশ থেকে পড়েননি। ভারতের  জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের সংগ্রামশীল ধারায় তাঁদের উত্থান। উনিশ শতকের শেষে মহারাষ্ট্রের পুনে শহরে প্লেগে আক্রান্ত শহরবাসীর ওপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে যে প্রতিক্রিয়ার সূত্রপাত তা জাতীয় কংগ্রেসের মঞ্চে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করে বিশ শতকের প্রথম দিকে অনুশীলন সমিতি ও যুগান্তর দলের মাধ্যমে। বঙ্গভঙ্গকে কেন্দ্র করে ক্রমাগত উত্তেজনা বৃদ্ধি কংগ্রেসের যুব কর্মীদের মধ্যে লাগাতার আন্দোলনে প্রয়োজনীয়তা বাড়িয়ে তোলে। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে নেতৃত্ব কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশনের বাইরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা শুরু করেন। মহারাষ্ট্রের বাল গঙ্গাধর তিলক, পাঞ্জাবের লালা লাজপথ রায়, বাংলার বিপিন চন্দ্র পাল এই ধারার সামনের সারিতে ছিলেন। তবে অনুশীলন সমিতি, অরবিন্দ ঘোষের বন্দেমাতরম পত্রিকা ও যুগান্তর দল বাংলায় প্রবল প্রভাবশালী ছিলেন যাঁরা হাতে অস্ত্র তুলে নেন। এই ধারা থেকেই খুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকী শহীদ হন। বারীন ঘোষ ও সহযোগীদের দ্বীপান্তর হয়।

১৯০৬ সালে এই চরমপন্থীদের কংগ্রেস থেকে বিতাড়ন করা হয় যদিও ১৯১১ সালের পর সবাই কংগ্রেসে ফিরে আসেন। ইতিমধ্যেই বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় এবং ভারতীয় সংগ্রামশীল ধারার কর্মীরা উপনিবেশের সর্বত্র সশস্ত্র অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা শুরু করে। এর পুরোধা ছিলেন রাসবিহারী বসু, নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য্য, যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, কর্তার সিং সোরাভ, অজিত সিং (ভগৎ সিং’র কাকা) প্রভৃতি। বিশ্বাসঘাতকতার ফলে অভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়। বাঘা যতীন বুড়িবালামের তীরে শহীদ হন, অজিত সিং ১৯৪৭’র আগে দেশে ফেরেননি, কর্তার সিং শহীদ হন, রাসবিহারী দেশে ফিরতেই পারেননি। নরেন্দ্রনাথই নাম পাল্টে মানবেন্দ্রনাথ রায় হন। তাসখন্দে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রায়’ই।

এরপর গান্ধীজির উত্থান ও রাওলাট দমন আইনের প্রভাবে পাঞ্জাবে ব্যাপক উত্তেজনা বৃদ্ধি ঘটে। ফলশ্রুতি জালিয়ানওয়ালাবাগ। এরপর বিশের দশকে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলে শিশু ভগৎ আন্দোলনে আকৃষ্ট হন। ফলে আন্দোলনের পর  পড়াশোনায় সমস্যা হলে লালা লাজপতের উদ্যোগে তৈরী দয়ানন্দ অ্যাংলো বৈদিক প্রতিষ্ঠান গুলির জন্য শিক্ষার সমাপ্তি ঘটে। এই সময়ে ১৯২৬ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে ভগৎ তৈরী করেন নওজোয়ান ভারত সভা। মূলত হিন্দুস্তান রিপাবলিকান আর্মির প্রকাশ্য সংগঠন হিসেবে কাজ করতো এই গোষ্ঠী। হিন্দুস্তান রিপাবলিকান আর্মি তৈরী হয়েছিল গয়া কংগ্রেসে (১৯২২) গান্ধীর বিরোধিতার মাধ্যমে। যদিও হলুদ কাগজে সংবিধান বানিয়ে কাজ শুরু হয় ১৯২৩’এ। সংবিধান বানানোয় মুখ্য ভূমিকা পালন করেন শচীন সান্যাল, ড: যদুগোপাল মুখার্জী, লালা হরদয়াল ও বিসমিল্লাহ। প্রধান সংগঠক ছিলেন রাম প্রসাদ বিসমিল্লাহ; কিছুদিনের মধ্যেই তিনি কাকোরী ষড়যন্ত্র মামলায় শহীদ হন আসফাকউল্লাহ ও রাজেন লাহিড়ীর সঙ্গে।

এই সংগঠনে ভগৎ সিং যুক্ত হন কাকোরীর পরে। এরপর দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলার ভাঙ্গা দুর্গে সভা করে সংগঠনের নামকরণ করা হয় হিন্দুস্তান সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশন (HRSA)। সোশ্যালিস্ট শব্দ যুক্ত করে ব্যাখ্যা করা হয় স্বাধীনতার অর্থ। দেশ স্বাধীন করে দেশকে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র করাই ছিল লক্ষ্য। মূলত গনতান্ত্রিক স্বাধীনতার সঙ্গে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ছিল মৌলিক লক্ষ্য। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের অর্থ কতটা তাঁরা বুঝেছিলেন সন্দেহ আছে; কিন্তু তাঁদের ইঙ্গিত ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতি এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

অনুশীলন সমিতি ও ইন্ডিয়ান রিপাবলিক অ্যাসোসিয়েসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ থাকা এই গোষ্ঠী প্রকাশ্যে সাইমন কমিশন বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই আন্দোলনের মিছিলে লালা লাজপত রায় লাঠির আঘাতে আহত হলে HRSA আঘাতকারী পুলিশকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। তখন ভগৎ সিং কীর্তি কিষান পার্টির সম্পাদক ও ছিলেন এবং বলবন্ত, বিদ্রোহী ও রণজিৎ ছদ্মনামে লেখালিখি করতেন।

লালা লাজপতের মৃত্যুর ঠিক একমাসের মাথায় সন্ডার্স ও চমন সিং’কে গুলি করে হত্যা করে HRSA (মূলত ভগৎ সিং ও রাজগুরু)। এরপরে আত্মগোপন করে ভগৎ ও তাঁর সঙ্গীরা কলকাতায় আসেন। তাঁদের মধ্যে চন্দ্রশেখর আজাদ (বলরাজ ছদ্মনামে HRSA-র ঘোষণা পত্র জারি করেন) ও ছিলেন। এইসময় যোগ দেন যতীন দাস। ভগৎ তাঁর ধর্মীয় বেশ (কেশ ও পাগড়ি) বর্জন করেন।

প্রাথমিকভাবে ম্যাজিক লন্ঠন দ্বারা কর্মকাণ্ড প্রচারের পর ফরাসি নৈরাজ্যবাদী ভিলাঁর ধারায় কেন্দ্রীয় আইনসভায় বোমা মারেন ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্ত। সেখানেই ‘লং লিভ রেভোলিউশন’ স্লোগানের উর্দু অনুবাদ ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগান তোলেন, সঙ্গে ‘আপ উইথ সোস্যালিজম/ ডাউন উইথ ইম্পিরিয়ালিজম’,  ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পতন হোক, প্রভৃতি স্লোগান দিয়ে ধরা পড়েন।

আদালতে ভগৎ নিজের ওকালতি নিজেই করেন, বটুকেশ্বর দত্তের উকিল ছিলেন আসফ আলি। ইতিমধ্যে লাহোর আর সাহারানপুরে বোমা কারখানা পুলিশ খুঁজে পায়, HRSA গোষ্ঠীর ২১ জন গ্রেপ্তার হয় ও সন্ডার্স হত্যায় অভিযুক্ত হন।

ব্রিটিশ বিচার ব্যবস্থাকে চরম অপদস্থ ও ব্যঙ্গের বিষয়বস্তুতে পরিণত করা ভগৎ সিং ও তাঁর দল ইনকিলাব জিন্দাবাদ স্লোগানকে সারা ভারতে জনপ্রিয় করে তোলেন। মূল ইংরেজী থেকে অনুবাদ করেছিলেন হসরত মোহানি। যিনি কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ছিলেন, ১৯৪৬ সংবিধান সভার সদস্য ছিলেন এবং ‘চুপকে চুপকে রাত দিন আসুঁ বাহানা ইয়াদ হ্যায়’ নামক উপমহাদেশ জোড়া জনপ্রিয় গজলটি লিখেছিলেন।

কোর্টের মধ্যেই লেনিনের কথা তুলে ধরা, ‘রং দে বসন্তী চোলা’ গানটি জনপ্রিয় করা, নিয়মিত রাজনৈতিক গ্রন্থ পড়া ও ‘Why I am atheist’ (বাংলায় কেন আমি নাস্তিক) নামক গ্রন্থ লেখা- কোনও কাজ থেকে বিরত থাকেননি ভগৎ। রাজনৈতিক বন্দীদের অধিকার নিয়ে টানা অনশন করে দাবী আদায় করেন। যে অনশন কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে শহীদ হন যতীন দাস। তাঁর উদ্দেশ্যে রবীন্দ্রনাথ লেখেন

“সর্ব খর্বতারে দহে তব ক্রোধদাহ–

হে ভৈরব, শক্তি দাও, ভক্ত-পানে চাহো॥

দূর করো মহারুদ্র যাহা মুগ্ধ, যাহা ক্ষুদ্র–

মৃত্যুরে করিবে তুচ্ছ প্রাণের উৎসাহ ॥

দুঃখের মন্থনবেগে উঠিবে অমৃত,

শঙ্কা হতে রক্ষা পাবে যারা মৃত্যুভীত।

তব দীপ্ত রৌদ্র তেজে নির্ঝরিয়া গলিবে যে

প্রস্তরশৃঙ্খলোন্মুক্ত ত্যাগের প্রবাহ ॥”

অবশেষে ২৩ শে মার্চ ১৯৩১ ভগৎ সিং এর ফাঁসি হয়। তাঁকে দেখতে এসে তাঁর মা জানিয়েছিলেন যে মুক্তির জন্য আবেদন করবেন। ভগৎ বারণ করেন। তাঁর বিয়ে ঠিক হয়েছিল। তিনি করেননি। কারণ তিনি দেখেছিলেন তাঁর কাকা অজিত সিং জীবনে বাড়ি ফেরেননি। নিজের কাকীমা কে চিরকাল অপেক্ষা করতে দেখেই এই সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কারণ তিনি জানতেন ‘প্রেয়সী যাঁর বিপ্লব; তিনিই বিপ্লবী’। বহু বিপ্লবীকেই ছাড়তে হয় মানব প্রেয়সীকে। এই ঘটনাকে স্মরণ করে পরবর্তী সময়ে আইপিটিএ কর্মী প্রেম ধাওয়ান লেখেন-

“তু না রোনা তু হ্যায় ভগৎ সিং কি মা

মরকে ভী লাল তেরা মরেগা নহি

ঘোড়ি চড়কে তো লাতে হ্যায় দুলহন সভি

হসকে হর কোই ফাঁসি চড়েগা নহি”।

ভগৎ সিং ২৩ বছর বয়সে শহীদ হন। তখনও পুরোপুরি তিনি বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের তত্ব আত্মস্থ করেছিলেন কিনা তা অপ্রাসঙ্গিক। প্রাসঙ্গিক হলো অর্থনৈতিক স্বাধীনতা-পূর্ণ স্বাধীনতার ডাক দেওয়া এই শহীদ মেহনতি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের প্রতি ঘৃণা দেখিয়েছিলেন কিন্তু জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের অন্য ধারাকে সমালোচনা করলেও নেতৃত্বের প্রতি সন্মান দেখিয়েছিলেন। নাহলে লাজপত রায়ের চরম সমালোচনা করেও তাঁর হত্যাকারীকে শাস্তি দিতেন না। বিপ্লব যে আসলে সমাজ পরিবর্তন তা বুঝতেন ও অন্য সঙ্গীদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেন। ব্যাপক তর্ক বিতর্ক ও আলোচনা করতেন তাঁরা সমাজতন্ত্রকে নিয়ে। পড়তেন আন্তর্জাতিক বামপন্থী নেতৃত্বের লেখা। স্বপ্ন দেখতেন শোষন মুক্ত ভারতের।

যে ইনকিলাবের স্লোগান তিনি জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন দেশ জুড়ে সেই ইনকিলাব কোনও পুস্পচ্ছাদিত শান্তি মাখানো পথ নয়; কোনও রোমান্টিক ভাবালুতা নয়; ঔপনিবেশিক শোষণের ভারতকে ধর্মনিরপেক্ষ সমাজতান্ত্রিক ভারতে – বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক অধিকারের পথ পেরিয়ে সমস্ত রকম রাজনৈতিক – সামাজিক- অর্থনৈতিক গনতান্ত্রিক অধিকারের ভারতে রূপান্তরিত করার মহান লড়াই সেই ইনকিলাব। যা এনে দেয় পূর্ণ স্বাধীনতা। সেই স্বপ্নের ভারতের লড়াই ছিল ইনকিলাব। প্রতিনিয়ত ক্রনি ক্যাপিটাল আর দুর্বিনীত দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক নেতাদের মহাজোটের দ্বারা শোষিত ভারত নয়; মানবিকতার সংগ্রামী ঐতিহ্যের ভারত গঠনই ছিল ইনকিলাব।

তাঁর সঙ্গীদের অন্যতম একজন অবিভক্ত সিপিআই’র নেতৃত্ব হন, তিনিই অজয় ঘোষ। শিব ভার্মা পরবর্তীকালে সিপিআই(এম)-এ যোগ দেন, তাঁরই লেখা শহীদ স্মৃতি আজও পার্টি কর্মীদের অবশ্য পাঠ্য। শিবকুমার মিশ্র সিপিআই(এম-এল)’তে যোগ দিলেন। আরএসপি’তে ছিলেন যোগেশ চ্যাটার্জি। কেউ কেউ কংগ্রেসেও রয়ে যান এমনকি ত্রৎস্কিপন্থী হিসাবেও নিজেদের চিহ্নিত করেন। অকালি দল, হিন্দু মহাসভাতে থেকেও কেউ কেউ তাঁর অনুগামী রয়ে যান বলে জানা যায়। তাঁর বিপুল জনপ্রিয়তা অজস্র হিন্দি ও পাঞ্জাবি ফিল্ম এবং টিভি সিরিয়ালের জন্ম দিয়েছে।

ভগৎ সিং’র উত্তরসুরীরা কখনো থমকে দাঁড়ায়নি। শ্রেণি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ সহ সমস্ত রকম শোষণের বিরুদ্ধে আজও তারা লড়ছেন। রাজপথে, কলে-কারখানায়, স্কুলে, কলেজে, দিল্লির রাজপথে কৃষকের পাশে, বাংলার রাজপথে ছাত্র- যুবদের রাজ্য ব্যাপী জাঠায়, ধর্মতলায় লাগাতার চাকুরীর দাবীতে ধর্নায়, কলেজে কলেজে সংসদ নির্বাচনের দাবীতে, শিক্ষার সাম্প্রদায়িকিকরণ ও বেসরকারীকরণের বিরুদ্ধে, ফ্যাসিবাদী ধাঁচের শাসনের বিরুদ্ধেও তারাই সংগ্রামে রত। এক ভগৎ সিং শহীদ হয়েছেন, তিনি ঐতিহ্য। তাঁর উত্তরাধিকার কাঁধে নিয়ে হাজার ভগৎ সিং তৈরী রয়েছে।

ওয়েবডেস্কের পক্ষে প্রাককথনঃ সৌভিক ঘোষ

ছবিঃ সোশ্যাল মিডিয়া

Spread the word