Site icon CPI(M)

Confronting the Neo Fascist is our Challenge Today

rajyo sommelon prakash feature

সিপিআই(এম) ২৭তম পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণ দেন পার্টির পলিট ব্যুরোর কো-অর্ডিনেটার প্রকাশ কারাত। সেই ভাষণের প্রতিলিপি এখানে অনুবাদ করে প্রকাশ করা হল।

২৭ তম পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্মেলনে উপস্থিত সকলকে সংগ্রামী অভিনন্দন। 

আগামি এপ্রিল মাসে মাদুরাইতে ২৪তম পার্টি কংগ্রেস আয়োজিত হতে চলেছে। এই কংগ্রেস আয়োজনের কাজ শুরু হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সীতারাম ইয়েচুরিকে আমরা হারাই। এর আগেই কমরেড বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যু হয়। কমিউনিস্ট পার্টিতে যৌথ নেতৃত্বের ধারা অনুশীলিত হয় বলেই এদের হারানোর শোক সত্বেও আমরা নিজেদের কাজে এগোতে পেরেছি। পার্টি কংগ্রেসের খসড়া রাজনৈতিক প্রতিবেদন  ও রাজনৈতিক পর্যালোচনা সংক্রান্ত প্রতিবেদন ইতিমধ্যে সকলের আলোচনার জন্য  প্রকাশিত হয়েছে।

যে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পরিস্থিতিতে এই রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে তার মূল বিষয়গুলিই আমি তুলে ধরব।

আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আমরা চারটি দ্বন্দ্বের নিরিখে ব্যাখ্যা করি। আমেরিকার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের জন্য নির্বাচিত হওয়ার পরে সেই পরিস্থিতি সম্পর্কে অন্তত আরেকটি দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গে আমাদের মনোযোগ দিতে হচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদ এখন ট্রাম্প জমানায় একটা ব্যাঘাতের ও নাটকীয় পট পরিবর্তনের মুখোমুখি হতে পারে। আমাদের খসড়া রাজনৈতিক প্রস্তাবে আমারা উল্লেখ করেছি যে আন্তঃ সাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্ব গত ৩ বছরে অনেকটাই নিশ্চুপ। এর আগে বাইডেন জমানায় ইউক্রেনের যুদ্ধে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ন্যাটোকে যুক্ত করা হয়েছিল। এমনকি জি-৭ ভুক্ত দেশগুলোকেও চীন ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে একজোট করা হয়েছিল। দেখে মনে হতে পারে মার্কন নেতৃত্বে এই দেশগুলোর মধ্যে একটা দারুণ ঐক্যের বাতাবরণ তৈরি করা গিয়েছে। ট্রাম্প জেতার ফলে সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর গোষ্ঠীতে নতুন বৈশিষ্ট্য যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং গত কয়েক সপ্তাহে আমরা সেটাই দেখছি। ন্যাটো ও আটল্যান্টিক জোটের যে ভিত্তি ট্রাম্প সেটাকে নাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে সরাসরি রাশিয়ার সাথে কথা বলার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। যেটা আশা করা হচ্ছে যে ট্রাম্প সাম্রাজ্যবাদী শিবিরে চাপ সৃষ্টির দিকে এগোতে পারে। 

আরেকটা উদাহরণের দিকে আমরা নজর দিতে পারি। ট্রাম্প গাজা নিয়ে কি বলছে! বলছে আমেরিকা গাজার অধিগ্রহণ করে দারুণ সুন্দর সমুদ্র তীরবর্তী রিসর্টবহুল রিভিয়েরায় পরিণত করবে। কিন্তু তার জন্য গাজার সমস্ত প্যালেস্তিনীয়দের , যাদের সংখ্যা প্রায় ১৯ লাখ, সেই জায়গা ফাঁকা করে দিতে হবে।আমেরিকা দক্ষিণ আফ্রিকার সমস্ত আর্থিক সাহায্য বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ ট্রাম্প সেখানকার বর্ণবিদ্বেষী শ্বেতাঙ্গদের পক্ষে তার অবস্থান স্পষ্ট করেছে।  একই সাথে ট্রাম্প বৈশ্বিক দক্ষিণ গোলার্ধ আর সামগ্রিকভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলোর বিরোধী। এর ফলে সাম্রাজ্যবাদ ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর দ্বন্দ্ব বৃদ্ধি পাবে। ২০১৭-২০২১ রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন সময়েও ট্রাম্প চীনের ওপরে চড়া হারে শুল্ক আরোপ করেছিল। এখন আবার চড়া হারে শুল্ক আরোপের হুমকি দিচ্ছে ট্রাম্প, ইতিমধ্যেই ১০% শুল্ক আরোপ করেছে, সেটাই আরো বাড়ানোর হুমকি দিচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদ ও সমাজতন্ত্রের মধ্যেকার যে কেন্দ্রীয় দ্বন্দ্ব যা নিয়ে ২৩তম পার্টি কংগ্রেসে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছিলাম তা আরো প্রকট হচ্ছে  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যেকার দ্বন্দ্বের মধ্য দিয়ে। ট্রাম্পের এই ধরণের বিভিন্ন নীতি গ্রহণের ফলে বিশ্ব জুড়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আমরা নানা চড়াই উতরাইয়ের সম্মুখীন হব। পার্টি কংগ্রেসে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের অভিমুখ নিয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা হবে। 

আমরা খসড়া রাজনৈতিক প্রস্তাবে লিখেছি যে এই যে সমস্ত ঘটনাপ্রবাহ বা ট্রাম্প যে সিদ্ধান্তগুলো নিচ্ছে এই সবই নয়াউদারবাদের সঙ্কটের চেহারাটা স্পষ্ট করে দিচ্ছে। রাজনৈতিকভাবে এই সঙ্কটের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে অতি দক্ষিণপন্থার ও নয়া ফ্যাসিস্তদের বাড়বাড়ন্তে। গত দুটো পার্টি কংগ্রেসেও এই বিষয়টা আমরা তুলে ধরেছিলাম। অতি দক্ষিণপন্থার ব্যাপক বাড়বাড়ন্ত দেখা যাচ্ছে বিগত ৩ বছরে। ইউরোপের ইতালি,অষ্ট্রিয়া,নেদারল্যান্ডস,হাঙ্গেরি এই সব দেশে এই রাজনৈতিক দলগুলোর বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে এর মধ্যে বেশ কিছু দলের অতীতে ফ্যাসিবাদীদের সাথে যোগাযোগও স্পষ্ট। জার্মানিতে সংসদের ভোট হতে চলেছে সেখানে অতি ডান এএফডি জনমত সমীক্ষায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। এইদলগুলো নয়া নাজি, নয়া ফ্যাসিস্ত অবস্থান নেয়। আমেরিকাতেও ট্রাম্পিজম বা ট্রাম্পের মতবাদ থেকে স্পষ্ট পুঁজিবাদ কিভাবে সেখানে সঙ্কট মোকাবিলা করতে চাইছে। 

যখন আমরা অতি দক্ষিণপন্থার উত্থানের কথা বলি তার মানে এই নয় যে বামপন্থা নিশ্চিন্হ হয়ে গেছে বা সম্পূর্ণভাবে পরাস্ত হয়েছে। লাতিন আমেরিকার দিকে তাকালে আমরা বামপন্থার অগ্রগতি দেখতে পাব। গত তিন বছরে ব্রাজিলে অতি দক্ষিণপন্থীদের পরাস্ত করে লুলা পুনরায় জয়লাভ করেছে, কলম্বিয়া,উরুগুয়েতেও বামপন্থীরা জয়লাভ করেছে। মার্কিন সীমান্তে বড় দেশ মেক্সিকো,সেখানে বামপন্থী মহিলা রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছে। বামপন্থার একটা বড় ঘাঁটি হয়ে উঠেছে লাতিন আমেরিকা। 

দক্ষিন পূর্ব এশিয়াতে আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় অনুৃরা দিসানায়েকের জয়লাভ এবং তাঁর দল জনতা বিমুক্তি পেরুমনার নেতৃত্বে একটি যুক্তফ্রন্ট এনপিপি-এর জয়লাভ একটা উল্লেখযোগ্য ঘটনা। সাংসদদের ৭০% এই জোটের অন্তর্ভূক্ত। এই উদাহরণগুলো থেকে স্পষ্ট যে বামপন্থী জোট যদি ঐক্যবদ্ধ হয় শ্রমজীবীদের সব অংশকে একজোট করতে পারে এবং শাসকশ্রেণীর নীীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে পারে তাহলে বিকল্প গড়ে তোলা সম্ভব। 

বাংলাদেশের পরিস্থিতি সত্যিই উদ্বেগজনক। ছাত্রদের নেতৃত্বে একটা ব্যাপক গণ-আন্দোলনের ফলে আওয়ামী লীগের তথা শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনের পতন ঘটে কিন্তু তার বদলে যেভাবে ইসলামিক মৌলবাদী শক্তি, অতি দক্ষিণপন্থীদের অগ্রগতি শুরু হয়েছে তা অত্যন্ত উদ্বেগের। সেখানে যা কিছু ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক তা দমন করা হচ্ছে। এর প্রতিক্রিয়ায় আমাদের দেশে, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-আরএসএস মুসলমান বিরোধী, সংখ্যালঘু বিরোধী একটা প্রচার শুরু করেছে। তারা বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর ঘটে চলা অবিচারের প্রতিবাদের বদলে এদেশের সংখ্যালঘুদের লক্ষ্যবস্তু করছে, এ বিষয়ে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। 

যখন আমরা অতি ডানপন্থার উত্থানের কথা বলি তখন,এমনকি আমাদের হায়দ্রাবাদ পার্টি কংগ্রেসেও আমরা বলেছিলাম যে মোদি সরকার-বিজেপি-আরএসএস আসলে আন্তর্জাতিক অতি দক্ষিণপন্থার অংশবিশেষ। আমরা দেখলাম মোদি তার বন্ধু ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনরায় বিজয়ে কতটা উল্লসিত। মোদি কিছুটা সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে না পেরে সোজা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে হাজির হয়। মোদি ছিল চতুর্থ রাষ্ট্রপ্রধান যে  ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাৎ করে। প্রথম ছিল ইসরায়েলের নেতানইয়াহু।

আজকের দিনে অতি দক্ষিণপন্থা বর্ণবিদ্বেষী, জাতিবিদ্বেষী, বিদেশী ও শরণার্থীদের প্রতি অসংবেদনশীল কিন্তু আবার একই সাথে নয়া উদারবাদী নীতির বিরোধিতাও করে যদিও নিজেরা ক্ষমতায় এলে সেই নয়া উদারবাদী নীতিই অনুসরণ করে।  বিজেপি-আরএসএস-মোদি সরকারের মধ্যে এই সমস্ত বৈশিষ্ট্যই বিদ্যমান। এই প্রেক্ষাপটেই আমরা জাতীয় পরিস্থিতির দিকে নজর দেব। 

আমরা লোকসভা নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতির দিকে লক্ষ্য করব। মে ২০২৪ এ লোকসভা নির্বাচনের পরে ৯ মাস অতিক্রান্ত। বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ব্যর্থ হয়। এটা তাদের জন্য একটা বড় ধাক্কা। তারা ভারতের রাষ্ট্রকাঠামোর প্রতিটা উপাদানকে নিজেেদের নিয়ন্ত্রণে এনে একটা হিন্দু রাষ্ট্র কায়েম করতে চেয়েছিল যা ধাক্কা খেয়েছে। কিন্তু এরপরেও আমরা দেখলাম তৃতীয় মোদি সরকার অতীতের মতই দেশটাকে চালানোর চেষ্টা করছে। একটা ত্রিফলা আক্রমণের সম্মুখীন দেশ। 

প্রথমটা হল হিন্দুত্ব মতাদর্শ। এই মতাদর্শকে আধিপত্যকারী মতাদর্শ বানানো এবং রাষ্ট্রীয় মতাদর্শ বানানোর চেষ্টা অব্যাহত। এর জন্য কেন্দ্রীয় সরকার যা যা করা সম্ভব সব করতে উদ্যত। 

দ্বিতীয় হল,নয়া উদারবাদী আক্রমণ চালিয়ে যাওয়া। নয়া উদারবাদের পথেই চলার সমস্ত লক্ষ্য অপরিবর্তিতই রয়েছে এটা বোঝা গেল কয়েক সপ্তাহ আগের কেন্দ্রীয় বাজেটে। ট্রাম্প যেমন ধনীদের শাসনতন্ত্র (plutocracy)কায়েম করেছে ভারতীয় প্রেক্ষিতে মোদিও সেই পথের পথিক। ট্রাম্প এলন মাস্ককে, বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি, যে কোন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না তাকে দায়িত্ব দিয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো আস্তে আস্তে ভেঙে ফেলার। আমরা এখনো সেই পর্যায়ে পৌঁছাইনি এটা ঠিক, কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি কিভাবে মোদির,বিজেপির প্রিয়পাত্র ধনকুবেরদের হাতে সরকারি সম্পদ তুলে দেওয়া হচ্ছে, যে কোন চুক্তির মারফত প্রাকৃতিক সম্পদ তাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। নয়া উদারবাদের একটা চরম রূপ আমরা দেখতে পাচ্ছি। 

তৃতীয় হল, কর্তৃত্ববাদী আগ্রাসন। গত এক দশকে আমরা দেখেছি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর আক্রমণ, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো দখলের চেষ্টা। নির্বাচন কমিশনকে দখলের চেষ্টা, ইউএপিএ,পিএমএলএ প্রভৃতি কঠোর আইন প্রয়োগ করে বিরোধী দলের নেতৃত্বকে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের (ঝাড়খন্ড,দিল্লি) জেলে পাঠানো, মিডিয়াকে দখল করা এর কোনটারই কোন পরিবর্তন হয়নি। কিছু মানুষ ভেবেছিলেন যেহেতু বিজেপির একার সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই, এনডিএ শরিকদের ওপরে সরকার নির্ভরশীল তাই এধরণের ঘটনাগুলো কম ঘটবে, কিন্তু এনডিএ শরিকদের সেই নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বা ইচ্ছা কোনটাই নেই।  এই ধরণের মনোভাবকে আমরা খসড়া প্রস্তাবে নয়া ফ্যাসিস্ত প্রবনতা বলে চিহ্নিত করেছি। আমরা জাতীয় পরিস্থিতির ব্যাখ্যায় প্রথমবার এই পরিভাষা ব্যবহার করলাম। আমরা বলেছি যে বিজেপি-আরএসএস পরিচালিত এই সরকারের নয়া ফ্যাসিস্ত বৈশিষ্ট্য দৃশ্যমান।  আমরা আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির ক্ষেত্রে এই শব্দ ব্যবহার করেছি । অতি দক্ষিণপন্থীদের মধ্যে এক বা একাধিক আন্দোলন,পার্টি থাকে যারা অতীতের ফ্যাসিবাদী মতধারা দ্বারা প্রভাবিত বা তাদের থেকে সৃষ্টি হওয়া।  যেমনটা আমি বলেছি ইতালি বা জার্মানির ক্ষেত্রে ফ্যাসিবাদী,নাজিবাদীরা (এএফডি) রয়েছে। 

এটা নতুন ধরণের ফ্যাসিবাদ, যেটা অতীতের ফ্যাসিবাদজাত হলেও যান্ত্রিকভাবে এদের তুলনা চলে না। অতীতের ফ্যাসিবাদ ক্ষমতা দখলের পরে বুর্জোয়া গণতন্ত্রকে খতম করে দিয়েছিল। নয়া ফ্যাসিস্তরা নির্বাচনে জিতে বলে আমরা সংসদ বজায় রাখব,নির্বাচনও বজায় রাখব কারণ তারা জানে যে একুশ শতকে বৈধতা পেতে গেলে নির্বাচন জরুরি। আমরা তাই এটা বলছি না যে এখন ভারতে নয়া ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছে, আমরা বলছি শাসকগোষ্ঠীর পরিচালনার ধাঁচটা নয়া ফ্যাসিবাদী। তারা নির্বাচন কমিশনকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে, আইন-আদালতের ওপরে নিয়ন্ত্রণ চাইছে, বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে মিডিয়াকে প্রভাবিত করছে , বিরোধীদের ভয় দেখাচ্ছে। বৃহত্তর ঐক্য গড়ে আমরা যদি এই প্রবনতাকে রুখতে না পারি তবে নয়া ফ্যাসিবাদ আমাদের দেশে কায়েম হবে এই বিষয়ে আমাদের সজাগ,সচেতন থাকতে হবে। 

গত লোকসভা নির্বাচনের আগে ইন্ডিয়া মঞ্চ গঠনের মধ্য দিয়ে বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ করে বিজেপি’র সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন ঠেকানো গেছে। ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলির বৃহত্তর ঐক্য এর জন্যই জরুরি। কিন্তু সিপিআই(এম)’র স্বাধীন শক্তি বৃদ্ধি ও বামপন্থীদের শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে আমাদের ঘাটতি রয়েছে। আরএসএস’এর সাম্প্রদায়িক মতাদর্শ এখন দেশের নানা প্রান্তে জনভিত্তি পেয়েছে, এই আদর্শের বিরুদ্ধে লড়তে গেলে সিপিআই(এম)’র স্বাধীন শক্তি ও বামপন্থীদের শক্তিশালী করা প্রয়োজন।

Spread the word