Site icon CPI(M)

যুবরা কেন ব্রিগেড যাবে …?

২৭ ফেব্রুয়ারি ২১, শনিবার

লেখায় : কলতান দাশগুপ্ত

মইদুল ইসলাম মিদ্যা আর কোনদিনও ব্রিগেড যাবে না। মইদুল কিন্তু শুধু নিজের জন্য চাকরি চাইতে নবান্নে যায়নি। ও গেছিল সবার দাবির কথা বলতে। মিডিয়ার একাংশ যখন আমাদেরকে অভ্যস্ত করার চেষ্টা করছে মন্দির মসজিদের বাইনারিতে, যখন অভ্যস্ত করার চেষ্টা করছে রগরগে কেচ্ছার চর্চায়… তখন কারখানা-কাজ-রুটির দাবিকে আবার সামনে নিয়ে এসেছিল মইদুল ও তার সাথিরা। সব মৃত্যুই দুঃখজনক, কিন্তু এই মৃত্যুটা সাইরেনের সতর্কতার মতো।
“চিমনির মুখে শোনো শোনো সাইরেন-শঙ্খ, গান গায় হাতুড়ি ও কাস্তে,
তিল তিল মরনেও জীবন অসংখ্য, জীবনকে চায় ভালবাসতে।” এই জীবনকে ভালোবাসার জন্যই ব্রিগেড যেতে হবে।

লকডাউন এর সময় দিদি মোদি কেউই বেকারদের কথা ভাবেনি। গত ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বেকারত্বের হার। যন্ত্রণা প্রতিমুহূর্তে আঘাত হানছে বেকারদের মনের মধ্যে। দিদি মোদী কোনো সুরাহা করেননি। দিদির রাজত্বে এসএসসি, টেট, পিএসসিতে চাকরি হয়নি। মোদির রাজত্বে ব্যাংক, বীমা, রেল, প্রতিরক্ষায় লাখো লাখো শূন্য পদ থাকলেও কাজ পায়নি বেকার যুবরা। দিদি ব্যস্ত চাল চুরিতে আর দাদা ব্যস্ত ছিল থালা বাজানোর গল্প দেওয়ায়।

১০ বছর আগে এই মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব ব্যানার্জি, শোভন চ্যাটার্জি, সব্যসাচী দত্তরা আমার-আপনার পাড়ায় পাড়ায় এসে বলেছিলেন, তৃণমূলকে ভোট দিন, লক্ষ লক্ষ বেকারের কাজ হবে, সোনার বাংলা তৈরি হবে। ১০ বছর পর এই একই লোকেরা আবার আমার-আপনার পাড়ায় এসে বলছে, বিজেপিকে ভোট দিন, লক্ষ লক্ষ বেকারের কাজ হবে, সোনারবাংলা তৈরি হবে। এরা কি আদৌ বিশ্বাসযোগ্য?

ওরাও জানে যে ওদের পায়ের তলার মাটি আলগা হয়ে এসেছে। তাই মানুষকে ভাগ করার খেলায় নেমেছে ওরা। কিন্তু ওরা জানেনা এটা সেই পশ্চিমবাংলা যারা ৯২ এর দাঙ্গার পরে এই বাংলায় সাম্প্রদায়িক হানাহানি রুখে দিয়েছিল। এটা সেই পশ্চিমবাংলা যে ২০০২ সালে এই রাজ্যকে গোধরা হতে দেয়নি। এখনো পাড়ার চায়ের দোকানে সিগারেটের কাউন্টার চেয়ে খাওয়ার সময় কেউ কাউকে তার ধর্ম জিজ্ঞেস করেনা। এখনো ঢাকুরিয়া লেকে প্রেমিক-প্রেমিকা আজীবন পাশে থাকার শপথ নেওয়ার সময় কেউ কাউকে ধর্ম জিজ্ঞেস করেনা। বাংলার এই ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্রিগেড আগামী ২৮ তারিখ।



যে কোনও সময়ে যে কোনও প্রয়োজনে মানুষের পাশে ছিল বামপন্থীরা। মানুষের প্রয়োজনে জনতার বাজার তৈরি হয়েছিল মহামারীর সময়। মানুষের প্রয়োজনে তৈরি হয়েছিল জনতার রান্নাঘর, তৈরি হয়েছিল জনতার ডাক্তারখানা। আর এই বছর মানুষের প্রয়োজনেই জনতার সরকার তৈরীর জন্য আমাদের ব্রিগেড যেতে হবে।

শহীদ কমরেড মইদুল ইসলাম মিদ্যা
Spread the word