Site icon CPI(M)

Last marshal of the Soviet Union Dmitry Yazov dies

মিখাইল গর্বাচ্যভের চক্রান্ত রুখে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন রক্ষার জন্য যারা সংগ্রাম করেছিলেন তাঁদের অন্যতম মার্শাল দিমিত্রী ইয়াজভের জীবনাবসান হয়েছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ বার্ধক্যজনিত অসুখে তাঁর জীবনাবসান হয়েছে। মস্কোতে প্রতিরক্ষা বিভাগ থেকে এই কথা জানানো হয়েছে।


সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের শেষ মার্শাল ইয়াজভের মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। ১৯৯১ সালের অগাস্টে যে আট জন শীর্ষ আধিকারিক গর্বাচ্যভের সোভিয়েত ভাঙা ও কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে চক্রান্তকে পরাস্ত করতে জানকবুল বিরোধিতা করেন তাঁদেরই অন্যতম মার্শাল ইয়াজভ। এই আটজন চেষ্টা করেন চরম সুবিধাবাদী গর্বাচ্যভের সরকারের পতন ঘটানোর। কিন্তু ব্যর্থ হন। এর জন্য মার্শাল ইয়াজভের ১৮ মাসের জেল হয়। পরবর্তীকালে রাশিয়ায় রাষ্ট্রপতি বরিস ইয়েলেৎসিনের সময় তিনি জেলের বাইরে আসেন।


“উনি অসামান্য সামরিক নেতা ছিলেন,” প্রতিরক্ষা মন্ত্রক থেকে বার্ধক্যজনিত অসুখে মার্শাল ইয়াজভের জীবনাবসানের খবর পাওয়ার পরে রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন সাংবাদিকদের এই কথা বলেন। গত ফেব্রুয়ারিতেই মার্শাল ইয়াজভকে রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত করা হয়। মস্কোতে সাংবাদিকদের কাছে শোকপ্রকাশ করে জানান রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু।


১৯২৪ সালের ৮ নভেম্বর দক্ষিণ পশ্চিম সাইবেরিয়ার ওমস্ক অঞ্চলের ইয়াজভো গ্রামে দিমিত্রী টিমেফেইয়েভিচ ইয়াজভের জন্ম। হিটলারের নাৎসী বাহিনীর লেনিনগ্রাদের অবরোধ ভাঙার সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তাঁর সামরিক জীবনের শুরু। সেটা ১৯৪১ সাল। দিমিত্রী ইয়াজভের তখন ১৭ বছর, লাল ফৌজের লড়াকু সেনা। এপর্বে ধাপে ধাপে ১৯৪২ সালে মস্কোর ইনফ্যান্ট্রি স্কুল অব মিলিটারি ট্রেনিং এবং ১৯৫৬ সালে ফ্রউঞ্জ মিলিটারি আকাডেমি থেকে তিনি কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের নাৎসী বাহিনীর বিরুদ্ধে লাল ফৌজের হয়ে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন তরুণ ইয়াজভ। যুদ্ধের পরে ১৯৬৭ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের মিলিটারি অ্যাকাডেমি অব জেনেরাল স্টাফ থেকে তিনি পাশ করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ১৯৪২ এবং ১৯৪৫ সালে দুবার গুরুতর আহত হন দিমিত্রী। সেই সময়ে যথাক্রমে ভোল্কহভ ও লেনিনগ্রাদে পদতিক বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন জেনারেল ইয়াকভ। পাশাপাশি বাল্টিক সাগর এবং আর্মি গ্রুপ কোর্টল্যান্ড অবরোধে নেতৃত্ব দেন তিনি। ১৯৪৬-৫৩ সাল লেনিনগ্রাদে ডেপুটি কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন।


১৯৬২ সালে কিউবা মিসাইল সঙ্কটের সময়ে জেনারেল ইয়াজভকে হাভানায় রেজিমেন্ট কমান্ডারের দায়িত্ব অর্পণ করে পাঠানো হয়। ১৯৭৯-৮০ সালে চেকোস্লোভাকিয়ায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর নেতৃত্ব দেন। ১৯৮০-৮৪ সালে নেতৃত্ব দেন আফগানিস্তানে বাহিনী পরিচালনায়।


১৯৮৭ সালের ৩০ মে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব পান মার্শাল ইয়াজভ। ১৯৯১ সালের অগাষ্ট পর্যন্ত তিনি ওই পদে ছিলেন। ১৯৯০ সালের ২৮ এপ্রিল সোভিয়েত ইউনিয়নের মার্শাল পদে নিয়োগ করা হয় দিমিত্রী ইয়াজভকে। প্রায় পাঁচ দশকের দীর্ঘ সামরিক জীবনে অজস্র খেতাব ও পুরস্কারে সম্মানিত মার্শাল দিমিত্রী ইয়াজভের লেখা বেশ কিছু বই রয়েছে। ১৯৮৭ সালের জুন থেকে ১৯৯০ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টির পলিট ব্যুরোর প্রার্থীসভ্য ছিলেন তিনি। ১৯৯১ সালে প্রতিবিপ্লবী শক্তির দমনপীড়ন রুখতে গঠিত স্টেট অব এমার্জেন্সি কমিটির (এসইসি)র অন্যতম নেতা ছিলেন মার্শাল ইয়াজভ।

Spread the word