18 February, 2020
শেষ পর্যন্ত জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আসতেই বেআব্রু দিল্লী পুলিশ। দু’মাস আগে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি তাণ্ডবের এমনই ভিডিও এ বার সামনে এল। ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখের এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে দিল্লি পুলিশকে লাইব্রেরিতে ঢুকে কার্যত একতরফা তাণ্ডব চালাতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং প্রাক্তনীদের নিয়ে গঠিত জামিয়া কো-অর্ডিনেশন কমিটির তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রথমে ৪৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়। লাইব্রেরির সিসিটিভি ফুটেজ ঘেঁটে সেটি বার করা হয়েছে বলে জানা যায়। তাতে শুধু মারধরই নয়, লাঠি উঁচিয়ে পড়ুয়াদের শাসানিও দিতে দেখা গিয়েছে পুলিশকে। ক্রমশ পরিষ্কার হয়ে চলেছে অমিত শাহের অধীনস্থ কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র দপ্তর শিক্ষার পরিপন্থী হয়ে চলেছে।
ছাত্রদের কেউ বই-খাতা খুলে একাই পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ এক জায়গায় এক সঙ্গে গোল হয়ে বসে। এমন অবস্থায় লাইব্রেরির মধ্যে উর্দিধারীদের দেখে হুলস্থুল পড়ে গেল চারিদিকে। হঠাৎ একদল পুলিশ ঢুকে পরে লাইব্রেরীর মধ্যে। এসে পড়ল এলোপাথাড়ি লাঠির ঘা। মাথা বাঁচাতে টেবিলের নীচে আশ্রয় নিলেন কেউ। কেউ আবার সেঁটে গেলেন দেওয়ালে। তাতেও রেহাই মিলল না। কখনও মাথায়, তো কখনও আবার পিঠে এসে পড়ল লাঠির বাড়ি।
পরবর্তীতে ‘Quint’ নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত আরো ৪টি ফুটেজে দেখা গেছে গোটা ক্যাম্পাস জুড়ে পুলিশি তান্ডবের ছবি। দেখা গেছে লাইব্রেরির টেবিল ভেঙে সেই টুকরো দিয়েও ছাত্র-ছাত্রীদের পেটানোর দৃশ্য। এমনকি পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীর উর্দিধারীরা এতোটাই বেপরোয়া ছিল যে ছাত্রছাত্রীদের মারার পরে প্রকাশ্যেই তারা ভেঙেছে সিসিটিভি ক্যামরোগুলোও।
জামিয়া কো-অর্ডিনেশন কমিটির তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ‘‘এই সিসিটিভি ফুটেজ পড়ুয়াদের উপর পুলিশি নৃশংসতার প্রমাণ। এতে প্রমাণিত হয়, কীভাবে রাষ্ট্রের পোষা সন্ত্রাসবাদীরা লাইব্রেরিতে ঢুকে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া পড়ুয়াদের উপর নৃশংস অত্যাচার চালিয়েছে।’’ ভিডিয়োটি সামনে আসার পর নতুন করে দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শুধু দোষী পুলিশ অফিসারই নয়, দাবি উঠেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ইস্তফারও। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের অপরাধ দমন শাখা জামিয়া কাণ্ডের তদন্ত করছে ও ৪৯ সেকেন্ডের ভিডিয়োটি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।