সারা ভারত ধর্মঘট সম্পর্কে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি(মার্কসবাদী) পলিট ব্যুরো র প্রেস বিবৃতি

৮ জানুয়ারি,২০২০

অভিনন্দন পলিট ব্যুরোর

বিশাল সংখ্যক গ্রেপ্তার এবং দমন-পীড়ন সত্ত্বেও দেশজুড়ে সাধারণ ধর্মঘট ব্যাপকভাবে সফল করার জন্য শ্রমিকশ্রেণি, কৃষক, খেতমজুর, ছাত্র এবং সমাজের অন্যান্য গণতান্ত্রিক অংশকে অভিনন্দন জানিয়েছে সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো। কেরালায় সর্বাত্মক ধর্মঘট হয়েছে একথা জানিয়ে বুধবার এক বিবৃতিতে পলিট ব্যুরো বলেছে, বিজেপি’র নৃশংসতা এবং রাজ্য সরকারের নিপীড়ন উপেক্ষা করেই ধর্মঘট প্রায় সফল হয়েছে ত্রিপুরায়। জনজীবন সম্পূর্ণ স্তব্ধ ছিল মণিপুরে। তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকার ব্যর্থ করার যাবতীয় উদ্যোগ নেওয়া সত্ত্বেও অত্যন্ত প্রাণবন্ত এবং ব্যাপক ধর্মঘট হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। ধর্মঘটে নজিরবিহীন সাড়া মিলেছে আসাম, বিহার, ঝাড়খণ্ড, পাঞ্জাব, ওডিশা, মধ্য প্রদেশ, তামিলনাডু, মহারাষ্ট্র সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে। এদিনের ধর্মঘট আরও বড় ধরনের সংগ্রামের লক্ষ্যে মানুষের বৃহত্তর ঐক্যের রাস্তা আরও মসৃণ করে দিল বলে মনে করে পলিট ব্যুরো। মানুষের জীবনযাত্রার কঠিন পরিস্থিতির কথা অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে ট্রেড ইউনিয়নগুলির যৌথ মঞ্চ এবং বিভিন্ন ফেডারেশন। পলিট ব্যুরো একথা জানিয়ে বলেছে, জীবনযাত্রার মান ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে মোদী সরকারের নীতি যা অসাধারণ যৌথ দক্ষতার মাধ্যমে কার্যকর করা হচ্ছে। অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রেই সাফল্যের সঙ্গে ধর্মঘট হয়েছে সংগঠিত ও অসংগঠিত উভয় ক্ষেত্রের শিল্প শ্রমিকদের অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে। আর্থিক এবং অন্যান্য পরিষেবা ক্ষেত্রের কর্মীরাও বিপুলভাবে শামিল হয়েছিলেন ধর্মঘটে। সর্বাত্মক ধর্মঘট হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্র, পরিবহণ, চা, চটকল, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্রকল্প কর্মীদের ক্ষেত্রে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এবারের ধর্মঘটে লক্ষণীয় বিষয় হলো গ্রামে কৃষক এবং খেতমজুরদের বিপুলভাবে অংশগ্রহণ। দেশে কৃষি সঙ্কটের কথা তুলে ধরতেই তাঁরা শামিল হয়েছিলেন এদিনের ধর্মঘটে। একই সঙ্গে ছাত্র সংগঠনগুলিও ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল। পড়াশোনার ক্ষেত্রে খরচ বৃদ্ধির পাশাপাশি শিক্ষাঙ্গনে গণতান্ত্রিক পরিবেশের ওপর আঘাতের বিষয়টি তুলে ধরতেই ধর্মঘটে শামিল হয়েছিলেন পড়ুয়ারা। সম্প্রতি জামিয়া মিলিয়া, আলিগড় মুসলিম এবং জেএনইউ’র ক্যাম্পাসে তাণ্ডব আরও প্রকটভাবে সামনে চলে এসেছে গণতন্ত্রের উপর আঘাতের দিকটি। সাধারণ ধর্মঘটের বার্তা সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন ছাত্ররা। বিশেষত তাঁরা ভারতীয় সংবিধান রক্ষার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও বিপুলভাবে অংশ নিয়েছেন এদিনের ধর্মঘটে। শ্রমিক ও শ্রমজীবী মানুষের অন্যান্য অংশ এবং ছাত্র ও গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষের প্রতিবাদ দ্বিগুণ আকার নেবে বলে প্রত্যয়ী পলিট ব্যুরো। বিবৃতিতে পরিশেষে বলা হয়েছে, আমাদের শ্রমিকশ্রেণির বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে বিপন্ন করে অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বিভাজনের মেরুকরণের নীতি নিয়ে চলা হচ্ছে। ভারতীয় সাধারণতন্ত্রের সাংবিধানিক মৌলিক নীতিগুলিকে খণ্ডন করে আরও বেশি পর্যায়ে ফ্যাসিস্ত আক্রমণ নামিয়ে আনার উদ্যোগও চলছে। এইসব উদ্যোগ পরাজিত করার পাশাপাশি সমাধানের রাস্তাও খুঁজে দেবে এদিনের এই যৌথ লড়াই বলে মনে করে পলিট ব্যুরো।
শেয়ার করুন

উত্তর দিন